জোরালগঞ্জ-সোনাপুর সড়কটির ভবিষ্যৎ কোন পথে!

  • আপডেট সময় শনিবার, জুলাই ৩১, ২০২১
  • 758 পাঠক

নিজস্ব প্রতিনিধি : প্রকল্পের পুরো অগ্রগতি না হওয়ায় সরকারের সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের চট্রগ্রামের জোরালগঞ্জ হয়ে নোয়াখালীর সোনাপুর সড়কের  ভবিষ্যৎ একটি নিরব অন্ধকারের পথে ধাবিত হয়ে চলছে। ফলে দেশের পুরো দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের একটি লালিত স্বপ্নই ভেস্তে চলছে কিনা সন্দেহ করছেন দেশের সচেতন নাগরিকরা।

সূত্রমতে, বিগত ২০১৫ সালে ১ সেপ্টেম্বর একনেকে সরকার দেশের কমপক্ষে ২০ টি জেলার মানুষের দৈনন্দিন যোগাযোগ ও যাতায়াত ব্যবস্থা সহজকরণের উপায় হিসেবে জোরালগঞ্জ হতে নোয়াখালীর সোনাপুর প্রকল্পটি অনুমোদন প্রদান করেন।এর জন্য প্রকল্প ব্যয় হিসেবে ২৪৫ কোটি ৩৯ লাখ টাকা বরাদ্ধ করা হয়।

যাতে ২০২১ সালে জুনের মধ্যেই এ সড়কের সার্বিক কাজ শেষ করার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।

জানা গেছে, সোনাপুর-জোরালগঞ্জ ৫৬.৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যসম্পন্ন সড়কটির নোয়াখালী অংশ ৩০.৫০ কিলোমিটার, ফেনী ১৯ কিলোমিটার এবং চট্রগ্রাম অংশে ৭ কিলোমিটার।

কিন্তু সরেজমিনে দেখা গেছে, এ সড়কটির নোয়াখালীর সদর, কবিরহাট, কোম্পানীগঞ্জসহ ছোট ফেনীর নদীর ওপর  ৪৭১ মিটারের দৈর্ঘ্য সেতুটি  শতভাগ নিমার্ন শেষ হলেও ফেনী ও চট্রগ্রামের মিরসরাইয়ে কোন কাজেরই প্রাকল্পিক নান্দনিকতা চোখে পড়েনি।

বরং, ফেনীর সোনাগাজি ও চট্রগ্রামের মিরসরাই  এলাকায় এ সড়কটি বিদ্যমান অংশ বিশেষে ব্যাপক খাদখন্দ দেখা গেছে। শুধু তাই নয়, জোরালগঞ্জ-সোনাপুর সড়কটির সোনাগাজি শহরের ওপর দিয়েও চলে যাওয়া অংশবিশেষও আগের ন্যায়ই বেশ অপ্রশস্ত রয়েছে। যাতে পাশাপাশি দুটো গাড়ি চলতে গিয়েও নানা বিপাক পোহাতে হয়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মিরসরাইয়ের জোরালগঞ্জ বাজার পর্যন্ত অংশটি যেভাবে ছিল, ঠিক সেভাবেই রয়েছে। মাঝে মধ্যে স্থানীয় সড়ক বিভাগ কিছু ইট, কংকর ঢেলে দায়সারার চেষ্টা করলেও একটি মহাসড়ক ব্যবস্থায় তা অতিব খড়কুটোরই ন্যায়। তাছাড়া এসব অংশে সামান্যতমও প্রসারিত করা হয়নি।

সচেতন নাগরিকেরা মনে করছেন, প্রকল্পটির ফেনী ও চট্রগ্রাম অংশের বাদবাকী কাজ দায়িত্বশীলমহলের একান্ত অবহেলা, দায়িত্বহীনতা ও নানা অজুহাতে পতিত থাকার ফলে এ প্রকল্পটির নোয়াখালীর অংশ বিশেষ ব্যবহার করেও কোন গাড়ি এ পথে সচলকরণ সম্ভব নয়।

সড়ক নির্মাণের পাশাপাশি ইতোমধ্যে সড়কের দু’পার্শ্বে ভূমির মূল্য বৃদ্বি পেয়েছে। সোনাপুর – জোরালগঞ্জ সড়কটি ঘিরে এর দু’পাশে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প কারখানা গড়ে ওঠার উজ্বল সম্ভাবনা রয়েছে।

ইতোপূর্বে, বেশ কয়েকজন শিল্পদ্যোক্তা প্রকল্প এলাকাসমূহ পরিদর্শন ও সম্ভাব্যতা যাছাই করেছেন। এ ব্যাপারে তারা জানান, যাবতীয় সূযোগ সুবিধা সম্বলিত চট্রগ্রামের মিরসরাই অঞ্চলে দেশের সর্ববৃহৎ ইপিজেড নির্মিত হচ্ছে। এ সড়কটি চালু হলে এর সাথে পুরো নোয়াখালীও অর্থনৈতিকভাবে জেগে ওঠতো।

এ বিষয়ে নোয়াখালীর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বিনয় কুমার পাল বলেন, আমাদের দায়িত্বটুকু শেষ করেছি। এখন ফেনী আর চট্রগ্রামের বাদবাকী টুকু শেষ করা গেলে পুরো সড়কের সুফল পাওয়া যেতো।

চট্রগ্রাম হতে ফেনী হয়ে নোয়াখালীর সোনাপুরে পৌঁছতে যে কোন গাড়িতে কমপক্ষে ৪/৫ ঘণ্টা লাগলেও জোরালগঞ্জ হয়ে সোনাপুর সড়কটি চালু হলে মাত্র ২ থেকে আড়াই ঘণ্টার মধ্যে নোয়াখালীর সোনাপুরে পৌঁছা সম্ভব হতো বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এছাড়া বহুল প্রত্যাশিত সড়কটি চালু হলে নোয়াখালী, লক্ষীপুর, চাঁদপুর ছাড়াও খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দেড় থেকে দুই কোটি অধিবাসী উপকৃত হবে। এতে প্রায় পঁয়ত্রিশ কিলোমিটার দূরত্ব কমে যাবে। এতে সময় ও অর্থ দু’টোর সাশ্রয় ঘটবে। এছাড়া লক্ষীপুর, চাঁদপুরসহ খুলনা ও বরিশাল বিভাগের যানবাহনসমূহ এপথেই চলাচল করবে।

অন্যদিকে, নোয়াখালী ও লক্ষীপুরের সাথে চট্রগ্রামের সরাসরি ট্রেন যোগাযোগ না থাকায় বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী বহনে আরো অধিকতর সহজ হতো। যা এ অঞ্চলের অর্থনীতি ও সামাজিক অগ্রসরতার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!