কাউকে ‘হে কুকুর’ বলে সম্মোধন কিংবা ‘হে গাধা’ বলে সম্মোধন করা বৈধ নয়। কেননা মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। মানবজাতির এই সম্মান ও মর্যাদা সর্বজনীন। প্রতিটি মানুষ সে বিশ্বাসী হোক বা অবিশ্বাসী, মৌলিক সম্মান ও অধিকারের ক্ষেত্রে সমান।
পবিত্র কোরআনের বর্ণনা থেকেও ‘সাধারণ সম্মান সব মানুষের জন্য’ প্রমাণিত হয়। আল্লাহ বলেন, ‘আমি মানবজাতিকে সম্মানিত করেছি, তাকে কর্তৃত্ব দিয়েছি স্থলে ও জলে, তাদের দিয়েছি উত্তম জীবিকা এবং তাদের শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি আমার সৃষ্টিজগতের অনেকের ওপর।’ (সুরা বনি ইসরাঈল, আয়াত : ৭০)
রাসুল (সা.)-ও ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে মানুষকে সম্মান দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে, ‘রাসুল (সা.)-এর পাশ দিয়ে একটি লাশ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তিনি দাঁড়িয়ে গেলেন। তাঁকে বলা হলো, লাশটি একজন ইহুদির। রাসুল (সা.) বলেন, সে কি মানুষ নয়?’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৯৬১)
মানুষের মতো মানব-ভ্রূণও ইসলামের দৃষ্টিতে সম্মানিত। ইসলাম শরিয়ত অনুমোদিত কারণ ছাড়া মানব-ভ্রূণ হত্যাকে নিষিদ্ধ করেছে। কেননা তা প্রকারান্তে মানব হত্যার শামিল এবং মানবসত্তার প্রতি অসম্মান।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা অভাব-অনটনের ভয়ে তোমাদের সন্তানদের হত্যা কোরো না।’ (সুরা আনআম, আয়াত : ১৫১)
ইসলামের দৃষ্টিতে মানুষ সাধারণভাবে ক্ষমাপ্রাপ্ত। ক্ষমা প্রদানের মাধ্যমে আল্লাহ মানবজাতিকে সম্মানিত করেছেন। তাই নিছক ধারণার বশে কাউকে অভিযুক্ত করা বা শাস্তি দেওয়া যাবে না। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আমার উম্মতের সবাই ক্ষমাপ্রাপ্ত। কিন্তু অপরাধ প্রকাশকারীরা ছাড়া…।’ (বুখারি, হাদিস : ৬০৬৯)
শুধু পশুর নামে নয়, যেকোনো ব্যঙ্গাত্মক নামে কাউকে ডাকা নিষিদ্ধ। ইসলামী শরিয়ত এভাবে মানুষের নাম নিয়ে ব্যঙ্গ করাকে মারাত্মক গুনাহ ও গর্হিত কাজ বলে ঘোষণা করেছে।
পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘হে ঈমানদাররা, কোনো মুমিন সম্প্রদায় যেন অপর কোনো মুমিন সম্প্রদায়কে উপহাস না করে। কেননা যাদের উপহাস করা হচ্ছে তারা উপহাসকারীদের চেয়ে উত্তম হতে পারে এবং নারীরা যেন অন্য নারীদের উপহাস না করে। কেননা যাদের উপহাস করা হচ্ছে তারা উপহাসকারিণীদের চেয়ে উত্তম হতে পারে।
আর তোমরা একে অন্যের প্রতি দোষারোপ কোরো না এবং তোমরা একে অন্যকে মন্দ নামে ডেকো না; ঈমানের পর মন্দ নাম অতি নিকৃষ্ট। আর যারা তওবা করে না তারাই তো জালিম।’ (সুরা : হুজুরাত, আয়াত : ১১)
তাই আমাদের উচিত এ ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করা।
Leave a Reply