আত্মিক পরিশুদ্ধি লাভে অজু

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, নভেম্বর ১৬, ২০২১
  • 443 পাঠক

আলেমা মুশফিকা আফরা   

————————

মুসলমানের দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য অংশ অজু। কেননা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজসহ অন্যান্য ইবাদতের জন্য অজু অপরিহার্য। অজু তথা পবিত্রতা অর্জন ছাড়া নামাজ কবুল হয় না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, নামাজ বেহেশতের চাবি আর নামাজের চাবি অজু। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৪)

অজুর মধ্যে আল্লাহ তাআলা মুমিনের যেমন শারীরিক পরিচ্ছন্নতা ও সুস্থতার নানা দিক রেখেছেন, তেমনি তাতে রেখেছেন আত্মিক পরিশুদ্ধি লাভের উপায়। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর একাধিক হাদিসে সে ইঙ্গিত পাওয়া যায়। যেমন—রাসুলুল্লাহ (সা.) অজুর পর নিম্নোক্ত দোয়া পাঠ করতে বলেছেন, হে আল্লাহ! আমাকে পবিত্রতা অর্জনকারী ও তাওবাকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৫৫)

হাদিসে উল্লিখিত ‘পবিত্রতা অর্জনকারী’ শব্দটি শারীরিক পরিচ্ছন্নতা এবং ‘তাওবাকারী’ শব্দটি আত্মিক পরিশুদ্ধির প্রতি ইঙ্গিত প্রদান করে।

অজুর মাধ্যমে পাপ মার্জনা : অজুর মাধ্যমে বান্দা পাপমুক্ত হয়। মহানবী (সা.) বলেন, যখন কোনো মুমিন বা মুসলিম বান্দা অজু করে এবং মুখমণ্ডল ধৌত করে, তখন পানির সঙ্গে সেসব পাপ বের হয়ে যায়, যা অসংযত দৃষ্টির কারণে তার হয়েছিল। আর পানির শেষ ফোঁটা পর্যন্ত তা ঝরতে থাকে। যখন সে হাত ধৌত করে, তখন পানির সঙ্গে এমন সব পাপ বেরিয়ে যায়, যা তার হাতের স্পর্শে হয়েছিল এবং তা শেষ ফোঁটা পর্যন্ত ঝরতে থাকে। যখন সে তার দুই পা ধৌত করে, তখন পানির সঙ্গে এমন সব পাপ বের হয়ে যায়, যা পথচলার কারণে হয়েছিল এবং শেষ ফোঁটা পর্যন্ত তা ঝরতে থাকে। এমনকি অজুর মাধ্যমে বান্দা গুনাহমুক্ত হয়ে যায়। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৪৪)

অজুতে মর্যাদা বৃদ্ধি : অজুর মাধ্যমে আল্লাহর দরবারে বান্দার মর্যাদা বৃদ্ধি ঘটে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমি কি তোমাদের এমন বিষয়ের প্রতি পথনির্দেশ করব না, যার দ্বারা আল্লাহ গুনাহ মাফ করেন এবং মর্যাদা বৃদ্ধি করেন? সাহাবিরা বললেন—হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসুল! তিনি বলেন, অনিচ্ছা সত্ত্বেও পরিপূর্ণরূপে অজু করা, মসজিদের উদ্দেশে বেশি বেশি কদম ফেলা এবং এক নামাজের পর অন্য নামাজের জন্য অপেক্ষা করা। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৫১)

অজু জান্নাত লাভের মাধ্যম : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) একদিন ফজরের নামাজের সময় বেলাল (রা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, হে বেলাল! ইসলাম গ্রহণের পর সর্বাধিক সন্তুষ্টিব্যঞ্জক যে আমল তুমি করেছ তার কথা আমাকে বলো। কেননা জান্নাতে আমি আমার সামনে তোমার জুতার আওয়াজ শুনতে পেয়েছি। বেলাল (রা.) বললেন, আমার কাছে এর চেয়ে সন্তুষ্টিব্যঞ্জক এমন কিছু করিনি যে আমি দিনরাতের যখনই পবিত্রতা অর্জন করেছি, তখনই সে পবিত্রতা দ্বারা নামাজ আদায় করেছি; যে পরিমাণ নামাজ আদায় আমার ভাগ্যে লেখা ছিল। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১১৪৯)

অজু নুর সৃষ্টি করে : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মুমিনের জ্যোতি সে পর্যন্ত পৌঁছাবে, যে পর্যন্ত সে পানি পৌঁছাবে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৫০)

আল্লাহ তাআলা সবাইকে যথাযথভাবে অজু করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!