উল্লিখিত আয়াতে মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাদের দুনিয়ার জীবনের সৌন্দর্য কামনা করে আল্লাহওয়ালাদের দূরে সরিয়ে আল্লাহভোলা লোকদের পেছনে পড়তে নিষেধ করেছেন।
এর আরেকটি গুরুত্ব হলো, সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। মানুষ যার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে, ওঠা-বসা করে তার ব্যক্তিত্বের প্রভাব মানুষের ওপর পড়তে শুরু করে। তাই আল্লাহ ও তাঁর রাসুল এমন লোকদের থেকে দূরে থাকতে বলেছেন, যারা আল্লাহকে স্মরণ করার ব্যাপারে উদাসীন।
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘মানুষ তার বন্ধুর রীতিনীতির অনুসারী হয়। কাজেই তোমাদের প্রত্যেকেই যেন লক্ষ্য করে, সে কার সঙ্গে বন্ধুত্ব করছে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮৩৩)
অন্য হাদিসে নবীজি বলেছেন, ‘সৎ সঙ্গী ও অসৎ সঙ্গীর উপমা হলো কস্তুরী বহনকারী (আতর বিক্রেতা) ও কামারের হাপরের মতো। মৃগ কস্তুরী বহনকারী হয়তো তোমাকে কিছু দান করবে কিংবা তার কাছ থেকে তুমি কিছু খরিদ করবে কিংবা তার কাছ থেকে তুমি লাভ করবে সুবাস। আর কামারের হাপর হয়তো তোমার কাপড় পুড়িয়ে দেবে কিংবা তুমি তার কাছ থেকে পাবে দুর্গন্ধ।’ (বুখারি, হাদিস : ৫১৩৬)
এভাবেই দুনিয়ার জীবনে মানুষ যদি সৎ ও আল্লাহওয়ালাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে, তাহলে তারাও তাদের সঙ্গগুণে আল্লাহর ইবাদতের প্রতি যত্নবান হবে, যা তাদের ইহকাল ও পরকালকে মসৃণ করবে, আর যারা দুনিয়ার মিছে ধন-সম্পদ, প্রভাব প্রবৃত্তির নেশায় অসৎ লোকদের সঙ্গ গ্রহণ করবে, তারা দুনিয়া-আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাদের সঙ্গী হবে আফসোস।
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘জালিম ব্যক্তি সেদিন নিজের দুই হাত দংশন করতে করতে বলবে, হায়, আমি যদি রাসুলের সঙ্গে কোনো পথ অবলম্বন করতাম। হায়, দুর্ভোগ আমার, আমি যদি অমুককে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম! আমাকে তো সে বিভ্রান্ত করেছিল আমার কাছে উপদেশ পৌঁছার পর। আর শয়তান তো মানুষের জন্য মহাপ্রতারক।’ (সুরা : ফুরকান, আয়াত : ২৭-২৯)
তাই কারো সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আগে যাচাই করা উচিত, লোকটা ঈমানদার কি না। এ ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করতে গিয়ে মহানবী (সা.) বলেন, ‘তুমি মুমিন ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কারো সঙ্গী হবে না এবং তোমার খাদ্য যেন পরহেজগার লোকে খায়।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮৩২)
Leave a Reply