মাওলানা সাখাওয়াত উল্লাহ
————————-
আমাদের সমাজে এমন সংস্কৃতি প্রচলিত যে প্রত্যেক মুসলমানই চান তার আত্মীয়স্বজনকে যতটা সম্ভব মসজিদের পাশে কবর দিতে। মৃত ব্যক্তি আজান ও ইমামের কিরাআত শুনতে পায়—এমন ধারণা করে সাধারণত এটা করা হয়। অনেকে এ জন্য অসিয়তও করে যান। আসলে কবরের পাশে মসজিদ নির্মাণ করা কোনো সৌভাগ্যের বিষয় নয়।
আমাদের সমাজের অনেকে মনে করেন, মসজিদের কাছে যদি কবর দেওয়া হয় তাহলে হয়তো মৃত ব্যক্তি মসজিদের যত ফজিলত আছে যেমন—জিকির, কেরাতসহ সব ইবাদত তিনি পাবেন। কিন্তু বিষয়টি এমন নয়। তবে তিনি যদি জীবদ্দশায় সদকায়ে জারিয়া (প্রবহমান দান) করে গিয়ে থাকেন, তাহলে তিনি যেখানেই সমাহিত হোন না কেন, কবরেও এর সওয়াব পাবেন।
নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন : ‘যখন মানুষ মারা যায় তখন তিনটি ছাড়া তার সব আমল বন্ধ হয়ে যায়। সেই তিনটি হলো সাদকায়ে জারিয়া, উপকারী ইলম ও নেককার সন্তান, যে পিতার জন্য দোয়া করে। ’ (মুসলিম, হাদিস : ৪৩১০)
বরং কবর, মসজিদ ও মাজার একাকার করে ফেরার দরুন অনেক ক্ষেত্রে প্রসিদ্ধ ব্যক্তি হলে এটি শিরকের কেন্দ্র হয়ে যেতে পারে, যা থেকে বেঁচে থাকা আবশ্যক।
রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘সাবধান! তোমাদের আগে যারা ছিল তারা তাদের নবী ও নেক ব্যক্তিদের কবরগুলোকে মসজিদে পরিণত করেছিল। সাবধান! তোমরা কবরগুলোকে মসজিদে পরিণত করো না। আমি তোমাদের এ থেকে কঠোরভাবে নিষেধ করছি। ’ (মুসলিম, হাদিস : ৫৩২)
আর মুসল্লিদের দোয়া পাওয়ার স্বার্থেও মসজিদের পাশে কবর দেওয়ার কোনো দলিল নেই। কেননা দোয়া করা হয় আল্লাহর কাছে। এর জন্য কবরস্থানে যাওয়া শর্ত নয়। তিনি চাইলে যেকোনো স্থানেই কবরবাসীর জন্য দোয়া কবুল করেন।
তবে সাধারণভাবে মসজিদের পাশে পৃথক কবরস্থান করতে ইসলামী শরিয়তে বাধা নেই। এক্ষেত্রে মসজিদের পাশে পৃথক জমিতে কবর থাকলে অবশ্যই প্রাচীর দিয়ে মসজিদকে আলাদা করে নিতে হবে।
Leave a Reply