ধর্ম : অন্যের ক্ষতি করার পরিণাম ভয়াবহ

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২২
  • 385 পাঠক

মুফতি মুহাম্মদ মর্তুজা   

———————-

ইসলাম মানুষকে আন্তরিকতার শিক্ষা দেয়। কণ্যাণকামিতায় উৎসাহ দেয়। মুমিন একে অপরের কল্যাণকামি হওয়া ঈমানের দাবি। এর বিপরীতে কেউ যদি অপর মুমিনের ক্ষতি করার চেষ্টা করে, তাহলে তার পরিমাণ ভয়াবহ হবে।

কারণ মহানবী (সা.) এমন লোকদের অভিশাপ দিয়েছেন।পবিত্র হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, অভিশপ্ত সে, যে কোনো মুমিনের ক্ষতি করে অথবা তার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে। (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৪০)

কারণ এ ধরনের লোকজন খুবই ভয়ংকর হয়। তারা হাসিমুখে যেকোনো সময় যে কারো বাঁশি বাজিয়ে দেয়। তাই পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ এসব মুনাফিকের সঙ্গে নয়; বরং সত্যবাদীদের সঙ্গে থাকতে বলেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ঈমানদাররা, তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের সঙ্গে থেকো। ’ (সুরা : তাওবা, আয়াত : ১১৯)

আর মুনাফিকের পরিচয় দিতে গিয়ে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তারা মুখে তোমাদের সন্তুষ্ট রাখে, কিন্তু তাদের হৃদয় তা অস্বীকার করে। ’ (সুরা : তাওবা, আয়াত : ৮)

অর্থাৎ মুনাফিকের সব সময় মুখে এক, অন্তরে আরেক থাকবে। পবিত্র হাদিস শরিফে মুনাফিকের পরিচয় দিতে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, মুনাফিকের চিহ্ন তিনটি। (১) যখন কথা বলে, মিথ্যা বলে। (২) যখন অঙ্গীকার করে, ভঙ্গ করে। (৩) আর যখন তার কাছে কোনো আমানত রাখা হয়, সে তার খেয়ানত করে। (বুখারি, হাদিস : ৩৩)

অন্যের ক্ষতি করার পরিণাম ভয়াবহ

অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, চারটি স্বভাব যার মধ্যে পাওয়া যাবে, সে খাঁটি মুনাফিক এবং যার মধ্যে তার একটি দেখা যাবে তার মধ্যে মুনাফিকের একটি স্বভাব থাকবে, যে পর্যন্ত না সে তা পরিহার করবে—(১) যখন তার কাছে কোনো আমানত রাখা হয়, সে তা খেয়ানত করে, (২) যখন কথা বলে, মিথ্যা বলে, (৩) যখন অঙ্গীকার করে, ভঙ্গ করে এবং (৪) যখন কারো সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদ করে, তখন সে অশ্লীলভাষী হয় (অশ্লীল গালমন্দ করে)। (মিশকাত, হাদিস : ৫৬)

তাই মুমিনদের অবশ্যই এ ধরনের কাজে লিপ্ত হওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ বাহ্যিকভাবে যদিও মনে হবে যে এসব কাজ করলেই নিজের ক্ষমতা বেড়ে যাচ্ছে; কিন্তু বাস্তবে মহান আল্লাহর কাছে এ ধরনের লোক নিকৃষ্ট থেকে নিকৃষ্ট অবস্থানে চলে যাচ্ছে। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, সবচেয়ে নিকৃষ্ট মানুষ হলো দুমুখো মানুষ। এর কাছে আসে এক চেহারায়, ওর কাছে যায় আরেক চেহারায়। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ৮০৬৯)

যার অবস্থান আল্লাহর কাছে নিকৃষ্ট হয়ে যায়, তার চেয়ে হতভাগা আর কেউ হতে পারে না। বান্দার সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা হলো, মহান আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে অক্ষম হওয়া। প্রতি মুহূর্তে মহান আল্লাহর অফুরন্ত নিয়ামত ভোগ করে যারা মহান আল্লাহর শুকরিয়া করতে ব্যর্থ হয়, আল্লাহর অসন্তুষ্টির কাজ করে বেড়ায়, তাদের জীবন অঙ্কের ফলাফল শূন্য। মহান আল্লাহ সবাইকে এ ধরনের কাজ থেকে ফিরে আসার তাওফিক দান করুন।

 

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!