এখানে ইউসুফ (আ.) তাঁর বাবা ষড়যন্ত্র থেকে বাঁচার জন্য তাঁর স্বপ্নটি গোপন রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। এতে বোঝা যায়, যে তথ্য প্রকাশ করলে বিপদে পড়ার আশঙ্কা আছে, সেগুলো গোপন রাখাই ভালো। যেমন মুসা (আ.)-এর এক উম্মত ফিরাউনের অত্যাচার থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য শুরুর দিকে তার ঈমান গোপন রেখেছিল।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর ফিরাউন বংশের এক মুমিন ব্যক্তি যে তার ঈমান গোপন রাখছিল সে বলল, ‘তোমরা কি একটি লোককে শুধু এ কারণে হত্যা করবে যে সে বলে, ‘আমার রব আল্লাহ’ অথচ সে তোমাদের রবের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট প্রমাণ নিয়ে তোমাদের কাছে এসেছে? সে যদি মিথ্যাবাদী হয় তবে তার ওপরই বর্তাবে তার মিথ্যা; আর সে যদি সত্যবাদী হয় তবে যে বিষয়ে সে তোমাদের ওয়াদা দিচ্ছে তার কিছু তোমাদের ওপর আপতিত হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাকে হিদায়াত দেন না, যে সীমা লঙ্ঘনকারী, মিথ্যাবাদী। ’ (সুরা মুমিন, আয়াত : ২৮)
এভাবে নিজের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়, বিশেষ করে পারিবারিক জীবনের একান্ত গোপন বিষয়গুলো অন্যের কাছে ফাঁস করা নিকৃষ্ট অপরাধ।
আবু সাঈদ আল খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন সে ব্যাক্তি হবে আল্লাহর কাছে নিকৃষ্টতম পর্যায়ের, যে তার স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হয় এবং স্ত্রীও তার সঙ্গে মিলিত হয়, অতঃপর সে তার স্ত্রীর গোপনীয়তা ফাঁস করে দেয়। ’ (মুসলিম, হাদিস : ৩৪৩৪)
অন্য বর্ণনায় নবীজি (সা.) বলেছেন, সে ব্যক্তি কিয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে সর্বাপেক্ষা বড় আমানত খিয়ানতকারী যে তার স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হয় এবং স্ত্রীও তার সঙ্গে মিলিত হয়। অতঃপর সে তার স্ত্রীর গোপনীয়তা ফাঁস করে দেয়। ’ (মুসলিম, হাদিস : ৩৪৩৫)
শুধু স্ত্রীর গোপন কথাই নয়, অন্য ভাইয়ের আমানতস্বরূপ বলা কথাগুলো অন্যের কাছে ফাঁস করার অনুমতি নেই, যদি তা অন্য কারো বড় ধরনের ক্ষতি করার নীল নকশা না হয়।
জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কোনো ব্যক্তি কোনো কথা বলার পর মুখ ঘুরালে (কেউ শুনেছে কি না তা দেখলে) তা আমানতস্বরূপ। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮৬৮)
মহান আল্লাহ আমাদের কোরআন-হাদিসের নির্দেশনাগুলো বোঝার ও সে মোতাবেক আমল করার তাওফিক দান করুন।
Leave a Reply