মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ
—————-
মানুষের ওপর শয়তানের প্রথম হামলা ছিল তার দেহ থেকে কাপড় খসিয়ে তাকে উলঙ্গ করে দেয়া। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘এভাবেই সে (শয়তান) আদম ও হাওয়াকে সম্মত করে ফেলল এবং তার প্রতারণার জালে আটকে গিয়ে তারা উক্ত নিষিদ্ধ বৃক্ষের ফল আস্বাদন করল। ফলে সঙ্গে সঙ্গে তাদের গুপ্তাঙ্গ প্রকাশিত হয়ে পড়ল এবং তারা তড়িঘড়ি গাছের পাতাগুলো দিয়ে তা ঢাকতে লাগল। আল্লাহ তাদের ডেকে বললেন, আমি কি তোমাদের এ বৃক্ষ থেকে নিষেধ করিনি এবং বলিনি যে শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু? (সুরা আরাফ, আয়াত : ২২)
আজও পৃথিবীতে শয়তানের পদাংক অনুসারী ও ইবলিসের শিখণ্ডীদের প্রথম কাজ হলো নারীকে উলঙ্গ করে ঘরের বাইরে আনা ও তার সৌন্দর্য উপভোগ করা।
অথচ পৃথিবীর বিগত সভ্যতাগুলো ধ্বংস হয়েছে নারী ও মদের সহজলভ্যতার কারণেই। অতএব সভ্য-ভদ্র ও আল্লাহভীরু বান্দাদের কাছে ঈমানের পর সর্বপ্রথম ফরজ হলো নিজ নিজ লজ্জাস্থান আবৃত রাখা ও ইজ্জত-আব্রুর হেফাজত করা, অন্য ফরজ এর পর। নারীর পর্দা শুধু পোশাকে হবে না; বরং তা হবে তার ভেতরে, তার কথা-বার্তায়, আচার-আচরণে ও চাল-চলনে সর্ব বিষয়ে। পরনারীর প্রতিটি অঙ্গভঙ্গি ও মিষ্ট কণ্ঠস্বর পরপুরুষের হৃদয়ে অন্যায় প্রভাব বিস্তার করে। অতএব লজ্জাশীলতাই মুমিন নর-নারীর অঙ্গভূষণ ও পারস্পরিক নিরাপত্তার গ্যারান্টি। নারী ও পুরুষ প্রত্যেকে একে অপরের থেকে নিজ নিজ দৃষ্টিকে অবনত রাখবে। (সুরা নুর, আয়াত : ৩০-৩১)।
এবং পরস্পরে সার্বিক পর্দা বজায় রেখে শুধু প্রয়োজনীয় কথাটুকু স্বাভাবিকভাবে সংক্ষেপে বলবে। নারী ও পুরুষ প্রত্যেকে নিজ নিজ স্বাতস্ত্র্য ও পর্দা বজায় রেখে নিজ নিজ কর্মস্থলে ও কর্মপরিধির মধ্যে স্বাধীনভাবে কাজ করবে এবং সংসার ও সমাজের কল্যাণে সাধ্যমতো অবদান রাখবে।
নেগেটিভ ও পজিটিভ পাশাপাশি বিদ্যুত্বাহী দুটি কেবলের মধ্যে প্লাস্টিকের আবরণ যেমন পর্দার কাজ করে এবং অপরিহার্য এক্সিডেন্ট ও অগ্নিকাণ্ড থেকে রক্ষা করে, অনুরূপ পরনারী ও পরপুরুষের মধ্যকার পর্দা উভয়ের মাঝে ঘটিতব্য যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয় থেকে পরস্পরকে হেফাজত করে। অতএব শয়তানের প্ররোচনায় জান্নাতের পবিত্র পরিবেশে আদি পিতা-মাতার জীবনে ঘটিত ওই অনিচ্ছাকৃত দুর্ঘটনা থেকে দুনিয়ার এই পঙ্কিল পরিবেশে বসবাসরত মানব জাতিকে আরো বেশি সতর্ক ও সাবধান থাকা উচিত। কোরআন ও হাদিস আমাদের সেদিকেই হুঁশিয়ার করেছে।
Leave a Reply