দৈনিক দিশারী ডেস্ক
——————-
কোনো কাজে অন্যের অংশীদারিত্ব অপছন্দ করার নামই গাইরত বা আত্মমর্যাদাবোধ। আর এটি হচ্ছে সাধারণ অর্থের আত্মমর্যাদাবোধ। এই আত্মমর্যাদাবোধ সম্পর্ক যখন আল্লাহর সঙ্গে করা হয়। তখন এর অর্থ হবে আল্লাহ তাঁর সত্তার সঙ্গে অন্যের অংশীদারিত্ব পছন্দ করেন না। ইবাদত ও আনুগত্যে তাঁর প্রাপ্তি হবে নিরঙ্কুশ। যখন বান্দা আল্লাহর সত্তা ও গুণাবলিতে কাউকে শরিক করে, তখন আল্লাহর আত্মমর্যাদায় আঘাত লাগে। আর আল্লাহ শিরকের গুনাহকে অমার্জনীয় বলে ঘোষণা করেছেন।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সঙ্গে শরিক করা ক্ষমা করেন না, তা ছাড়া অন্যান্য অপরাধ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন, যে আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করে সে মহাপাপ করে’ (সুরা নিসা, আয়াত : ৪৮),
বিপরীতে কোনো বান্দা যখন মনে-প্রাণে আল্লাহর একত্ববাদের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, সাক্ষ্য দেয় এবং ইবাদত ও আমলে তা প্রকাশ পায়, তখন আল্লাহ খুশি হন। আল্লাহ এত বেশি খুশি হন যে বান্দার অতীতের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেন।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই বান্দার ওপর আল্লাহর অধিকার হলো তারা তাঁর ইবাদত করবে এবং তাঁর সঙ্গে শরিক করবে না। আল্লাহর ওপর বান্দার অধিকার হলো সে ব্যক্তিকে শাস্তি না দেওয়া যে তাঁর সঙ্গে শরিক করেনি।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৮৫৬),
অন্যদিকে আত্মমর্যাদার সম্পর্ক যখন বান্দার সঙ্গে হয় এবং তাঁর সঙ্গে আল্লাহর প্রতি তাঁর বোধ-বিশ্বাসের সম্পর্ক থাকে, তখন তা দুই শ্রেণিতে বিভক্ত, প্রথম প্রকার হচ্ছে বান্দার পক্ষ থেকে আল্লাহর প্রতি কোনো বস্তুর ব্যাপারে আত্মমর্যাদা প্রদর্শন করা। তা হলো বান্দা তার জীবনের সর্বাবস্থায় এবং সর্বসময় একটি নিঃশ্বাসও আল্লাহ ছাড়া আর কারো জন্য ব্যয় না করবে। এই দৃষ্টিকোণ থেকে আত্মমর্যাদার অর্থ হবে ‘গাইরুল্লাহ’কে (আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছুকে) জীবনে স্থান না দেয়া।
বান্দার এই আত্মমর্যাদা প্রশংসনীয় আল্লাহ পবিত্র কোরআনে এমন আত্মমর্যাদার পুরস্কার ঘোষণা করে বলেছেন, ‘ঈমানের সঙ্গে যে পুরুষ ও নারী সৎকাজ করবে তাকে আমি নিশ্চয়ই পবিত্র জীবন দান করব এবং তাদেরকে তাদের কাজের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দান করব।’ (সুরা নাহল, আয়াত : ৯৭),
বান্দার দ্বিতীয় প্রকার আত্মমর্যাদা হলো, নিজের আত্মমর্যাদার কারণে বান্দার কোনো কাজের ব্যাপারে অনুযোগ করা। যেমন বলা, আল্লাহ এটা কেন করলেন? আল্লাহ এটা না করলেও পারতেন, বান্দার এই আত্মমর্যাদা নিন্দনীয় ও ধ্বংসাত্মক। এটা বান্দার আত্মমর্যাদা নয়; বরং অহংকার ও অহমিকা। এই অহমিকা বহু মানুষকে সত্যের পথ থেকে বিচ্যুত করেছে।
ইরশাদ হয়েছে, ‘এবং তারা বলে, এই কোরআন কেন নাজিল করা হলো না দুই জনপদের কোনো প্রতিপত্তিশালী ব্যক্তির ওপর?’ (সুরা জুখরুফ, আয়াত : ৩১)
আল্লাহ সবাইকে উত্তম জীবন দান করুন। আমিন
Leave a Reply