কাউকে তুচ্ছ করলে যে ধরনের গুনাহ হয়

  • আপডেট সময় সোমবার, মার্চ ২০, ২০২৩
  • 189 পাঠক

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশকাল , ২০ মার্চ ,২০২৩

————————–
তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা মুমিনদের অভ্যাস হতে পারে না। পবিত্র কোরআনে তাচ্ছিল্যকারীকে নিকৃষ্ট লোক বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা এই নোংরা ও ঘৃণিত কাজ থেকে তাঁর মুমিন বান্দাদেরকে দূরে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। ইসলামে মানুষকে খারাপ নামে ডাকা বা কাউকে বিদ্রূপ করার সুযোগ তো নেই-ই, বরং এর পরিবর্তে সুন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষের সুনাম, মর্যাদা অক্ষত রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! কোনো সম্প্রদায় যেন অন্য সম্প্রদায়কে ঠাট্টা-বিদ্রূপ না করে, হতে পারে তারা বিদ্রূপকারীদের চেয়ে উত্তম। আর নারীরা যেন অন্য নারীদেরকে ঠাট্টা-বিদ্রূপ না করে, হতে পারে তারা বিদ্রূপকারিণীদের চেয়ে উত্তম। তোমরা একে অন্যের নিন্দা করো না, একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। ঈমান গ্রহণের পর (ঈমানের আগে কৃত অপরাধকে যা মনে করিয়ে দেয় সেই) মন্দ নাম কতই না নিকৃষ্ট! (এ সব হতে) যারা তাওবা করে না, তারাই জালিম।’ (সুরা হুজরাত: ১১)

মাওলানা মুফতি মুহাম্মদ তকি ওসমানি পবিত্র কোরআনের উপরোক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেছেন, ‘তাসখীর’-এর অর্থ কারো অপমান ও তাচ্ছিল্য করা। এমনভাবে কারো দোষ বর্ণনা করা, যাতে মানুষ তাকে নিয়ে ঠাট্টা-মশকরা করে, এতে ওই ব্যক্তির অন্তরে ব্যথা আসে। এ ধরণের কাজ অনেক রকম হতে পারে। যেমন— কারো চলাফেরা, ওঠাবসা, কথাবার্তা, অঙ্গভঙ্গি ইত্যাদি নিয়ে ব্যঙ্গ করা, কারো শাররিক গঠন ও আকার-আকৃতি নিয়ে কটূক্তি করা, তার কোনো কথা বা কাজের ব্যাপারে ঠাট্টা করা। চোখ, হাত-পা দ্বারা টিকা-টিপ্পনী মারা ইত্যাদি জিনিস অন্তর্ভুক্ত।

মহানবী (স.) উপহাসকারীদের সম্পর্কে বলেছেন, ‘একজন উপহাসকারীর জন্য বেহেশতের দরজা খুলে দেয়া হবে এবং তাকে বলা হবে ‘এসো।’ সে তার দুঃখ ও অসহায়ত্ব নিয়ে সামনে অগ্রসর হবে এবং যখন সে ভেতরে প্রবেশ করতে চাইবে, তখনই তার সামনে বেহেশতের দরজা বন্ধ হয়ে যাবে।’(কানজুল উম্মাল, হাদিস: ৮৩২৮)

মন্দলোক চেনার মানদণ্ড :

অন্যকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা, ঠাট্টা-বিদ্রূপ করাকে মন্দ লোকের কাজ বলে আখ্যা দিয়েছেন বিশ্বনবী (স.)। তিনি এ অভ্যাসকে মন্দ লোক চেনার মানদণ্ড বলেও ঘোষণা দিয়েছেন।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘কোনো ব্যক্তির মন্দ প্রমাণিত হওয়ার জন্য এতটুকু যথেষ্ট যে, সে তার মুসলমান ভাইকে তুচ্ছজ্ঞান করে।’ (ইবনে মাজাহ: ৪২১৩)

বিদ্রূপকারীরা পরকালে নিজেদের কৃতকর্মের জন্য আফসোস করবে। পবিত্র কোরআনে এ স্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যাতে কাউকেও বলতে না হয়, হায় আফসোস! আল্লাহর প্রতি আমার কর্তব্যে আমি যে শৈথিল্য করেছি তার জন্য! আর আমি তো ঠাট্টাকারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম।’ (সুরা জুমার: ৫৬)
“তোমাদের কোনো ভাই যাতে অন্য মুসলিম ভাইকে ছোট না করে অর্থাৎ তার মান-সম্মান ক্ষুণ্ন না করে। কেননা প্রত্যেক মুসলিমের প্রতি অন্য ভাইয়ের রক্ত, মাল ও সম্মানকে ক্ষুণ্ন করা হারাম করা হয়েছে।” (সহিহ মুসলিম ৪/১৯৮৬, হাদিস:২৫৬৪)

অতএব আমাদের উচিত, এসব মন্দ অভ্যাস ত্যাগ করা। অতীতে না জেনে এসবে লিপ্ত হয়ে থাকলে আল্লাহর কাছে তাওবা করা, যাতে পরকালে এর জন্য অনুতপ্ত হতে না হয়। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যকারীদের অন্তর্ভুক্ত না করুন। আমিন।

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!