দিশারী রিপোর্ট
————–
খৈয়াছড়া ঝর্ণা | বিস্ময়কর| চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে পাহাড়ের পাদদেশের একটি জলপ্রপাত। অনেকগুলো বিচ্ছিন্ন ধাপ, যা বাংলাদেশের আর কোন ঝর্ণাতে এখনও পর্যন্ত দেখা যায়নি। তাই ‘খৈয়াছড়া’ কে বলা হয় বাংলাদেশের ‘ঝর্ণা রাণী‘।
মিরসরাই উপজেলার খৈয়াছড়া ইউনিয়নের বড়তাকিয়া বাজারের উত্তর পার্শ্বে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ৪.২ কিলোমিটার পূর্বে এই ঝর্ণার অবস্থান।
এর মধ্যে ১ কিলোমিটার পথ গাড়িতে যাওয়ার পর বাকী পথ যেতে হয় পায়ে হেঁটে। বিস্ময়কর। খৈয়াছড়া – আকার আকৃতি ও গঠনশৈলির দিক দিয়ে এটা নিঃসন্দেহে এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ঝর্ণাগুলোর ১টি ।
এর মোট ৯ টি মুল ধাপ এবং অনেকগুলো বিচ্ছিন্ন ধাপ প্রমান করে যে এমন আর একটা ঝর্ণাও বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত দেখা যায়নি। খৈয়াছড়াতে সব সময় জ্বলে (এমন কি বৃষ্টিতেও) এমন একটি পাহাড় আছে, সেখানে আগুন কখনও নিভে না।
প্রকৃতির নান্দনিক তুলিতে আঁকা সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হচ্ছে দেশের ভ্রমণপিয়াসী মানুষ। অনেকে রাতের বেলায় চাঁদের আলোয় ঝর্ণার অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে পাহাড়ের পাদদেশে তাবু টাঙ্গিয়ে অবস্থান করছেন।
প্রকৃতির অপরূপ সৃষ্টি সেতুবন্ধন করে, সবুজের চাদরে ঢাকা বনানী রূপের আগুন ঝরায়, যেখানে প্রকৃতি খেলা করে আপন মনে, ঝুম ঝুম শব্দে বয়ে চলা ঝর্ণাধারায় গা ভিজিয়ে মানুষ যান্ত্রিক জীবনের অবসাদ থেকে নিজেকে ধুয়ে সজীব করে তুলছে খৈয়াছরা ঝর্ণায়।
প্রায় ৫০ বছর আগে থেকেই প্রবাহতি হচ্ছে খৈয়াছড়া র্ঝণাটি। পাহাড়ি এলাকা এবং ঝোপ ঝাড়ের জন্য কেউ তা আবিষ্কার করতে পারেনি। তাছাড়া এই দিকে মানুষের আগমন তেমন ছিলই না।
২০১০ সালে সরকার বারয়ৈাঢালা ব্লক থেকে কুন্ডরেহাট (বড়তাকয়িা) ব্লকের ২৯৩৩.৬১ হেক্টরর পাহাড়কে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করায় খৈয়াছড়া র্ঝণা জাতীয় উদ্যানের আওতাভুক্ত হয়।
ছুটির দিনগুলোতে পর্যটকরা সবুজে সমারোহ পাহাড় আর ঝর্ণা দেখতে যেখানে প্রকৃতির অপরুপ সৃষ্টি সেতুবন্ধন করে। পাহাড়ের সবুজ রং আর ঝর্ণার স্বচ্ছ জল মিলেমিশে একাকার হয়েছে মিরসরাইয়ের প্রাকৃতিক জলপ্রপাত খৈয়াছড়া ঝর্ণায়। প্রকৃতির নান্দনিক তুলিতে আঁকা এ ছবি দেখে মুগ্ধ হচ্ছে দেশের ভ্রমণপিয়াসী মানুষ।
ঝর্ণায় যাওয়ার রাস্তা একটিই| আর পথে আরো অনেক অ্যাডভেঞ্চার পিয়াসীর দেখা পাবেন, কাজেই পথ হারানোর ভয় তেমন একটা নেই বললেই চলে। এছাড়া সীতাকুন্ড বা মিরেরসরাই নেমে ওখান থেকে সিএনজি নিয়েও আসতে পারেন ঝিরির আগ পর্যন্ত।
জঙ্গলের ভেতর দিয়ে পাহাড়ি ঝিরিপথ ধরে প্রায় দেড় ঘণ্টা হাঁটলে দেখা পাবেন ঝর্ণার। হাতে সময় নিয়ে যাওয়া ভালো, ঝর্ণা দেখে ফিরতে ফিরতে বেশ সময় লাগবে। খাবার সঙ্গে করে নিয়ে যেতে পারেন, তবে ঝর্ণায় যাওয়ার পথেই অন্তত তিনটি জায়গায় দেখা মিলবে স্থানীয় হোটেলের, চাইলে সেখান থেকেও খেয়ে নিতে পারেন। খাবারের দাম তুলনামূলক সস্তাই হবে।
যদি ২ দিন সময় নিয়ে যান তবে সাথে ঘুরে আসতে পারেন নাপিত্তাছড়ার ৩টি ঝর্ণা, সীতাকুন্ড ইকো পার্কে সুপ্তধারা ঝর্ণা, সহস্রধারা ঝর্ণা, মহামায়া লেক ও ঝর্ণা, মহুরী প্রজেক্ট ও উইন্ডমিল।
এছাড়াও আরো সময় থাকলে যেতে পারেন চন্দ্রনাথ পাহাড়ের ওপরে যেখান থেকে বঙ্গোপসাগর দেখা যায়।
খাওয়ার জন্য : বড়তাকিয়া বাজারে থাকার কোন হোটেল নেই। কিন্তু আপনি চাইলে চেয়ারম্যানের বাংলোয় ওঠতে পারেন। মিরসরাই বা সীতাকুন্ডে আপনি থাকার জন্য বেশ কিছু স্থানীয় হোটেল পাবেন। মিরসরাই বা সীতাকুন্ডে খাওয়ার জন্য অনেক রেস্টুরেন্টও পাবেন।
Leave a Reply