হাদি-উল-ইসলাম। ৩০ মে, ২০২৪।
পারস্পরিক সম্মতি ছাড়া অন্যায়ভাবে অর্থ-সম্পদ জোরপূর্বক নিয়ে ভোগ করা জুলুম। পবিত্র কোরআনে এ ব্যাপারে বিশেষভাবে সতর্ক করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘ হে মুমিনরা, তোমরা একে অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে আত্মসাৎ করবে না, তবে পরস্পরের সম্মতিতে ব্যবসা করা বৈধ, তোমরা একে অন্যকে হত্যা কোরো না, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু। আর কেউ সীমালঙ্ঘন করে অন্যায়ভাবে এমন কাজ করলে তাকে অগ্নিদগ্ধ করব, তা আল্লাহর পক্ষে সহজ। ’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ৩০)।
বিশেষত উত্তরাধিকারদের মধ্যে সম্পত্তি বণ্টনে এ ধরনের জুলুম দেখা যায়। পবিত্র কোরআনে সম্পত্তি বণ্টনের মূলনীতি উল্লেখের পর আল্লাহ তা অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছেন।
ইরশাদ হয়েছে, ‘ তা আল্লাহর নির্দেশ, আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও সহনশীল। এসব আল্লাহর নির্ধারিত সীমা, কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করলে আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার নিচে নদী প্রবাহিত, তারা সেখানে চিরস্থায়ী হবে এবং তা মহাসাফল্য।
আর কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের অবাধ্য হলে এবং তাঁর নির্ধারিত সীমালঙ্ঘন করলে তিনি তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন। সেখানে সে স্থায়ী হবে এবং তার জন্য লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি আছে।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ১২-১৪)। অন্যের জমিকে অন্যায়ভাবে দখল করা কবিরা গুনাহ। এটা এমন গুনাহ, যা আল্লাহ কখনো ক্ষমা করবেন না।
কারণ এটা বান্দার হকের সঙ্গে সম্পৃক্ত। বর্তমানে এই গুনাহর কাজটি অহরহ ঘটছে। জাল দলিল করে অন্যের জমি দখল করা এতটাই ন্যক্কারজনক ও জঘন্য অপরাধ যে এমন কাজ সম্পাদনকারীর ওপর লানত বর্ষিত হতে থাকে। এ সম্পর্কে আবু তুফায়ল (রা.) বলেন, আলী (রা.)-কে প্রশ্ন করা হলো, রাসুলুল্লাহ (সা.) কি আপনাদের কাছে বিশেষভাবে কিছু বলে গেছেন। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) সর্বসাধারণের কাছে প্রকাশ করেননি এমন কোনো ব্যাপারে আমাদের বিশেষভাবে কিছু বলে যাননি, তবে একমাত্র আমার তলোয়ারের এ খাপটিতে যা আছে তা ছাড়া।
বর্ণনাকারী বলেন, তারপর তিনি তার তরবারির খাপ থেকে একটি সহিফা (লিখিত কাগজ) বের করলেন, যাতে লেখা ছিল—‘ আল্লাহ অভিসম্পাত করেন ওই ব্যক্তিকে, যে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে জবাহ করে, আল্লাহ অভিসম্পাত করেন সেই লোককে, যে জমিনের সীমানাচিহ্নসমূহ (আল) চুরি করে (পরিবর্তন করে), আল্লাহ অভিসম্পাত করেন সেই ব্যক্তিকে, যে তার পিতাকে অভিসম্পাত করে। আল্লাহ অভিসম্পাত করেন সেই ব্যক্তিকে, যে কোনো বিদআতি আশ্রয় দেয়।’ (মুসলিম, হাদিস : ৫০২০)।
অন্য হাদিসে এসেছে, সায়িদ বিন জায়েদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘ যে ব্যক্তি এক বিঘত পরিমাণ জমি জোরজবরদস্তি করে দখল করবে তাকে সাত স্তর পর্যন্ত বেড়ি পরিয়ে দেয়া হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৩১৯৮) ।
অন্য হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘ যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে সামান্য পরিমাণ জমিও দখল করবে, কিয়ামতের দিন তাকে সাত তবক জমিনের নিচ পর্যন্ত ধসিয়ে দেয়া হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ২৪৫৪)
Leave a Reply