মানুষের জীবনে তাওবার প্রয়োজন কেন

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, মে ৩০, ২০২৩
  • 138 পাঠক

 মাওলানা মুহাম্মদ আনসারুল্লাহ হাসান

——————————————

তাওবা মানে ফিরে আসা। পরিভাষায় তাওবা হলো, যেসব কথা ও কাজ মানুষকে আল্লাহর থেকে দূরে সরিয়ে দেয় তা থেকে ফিরে আসা এবং সে সব কথা ও কাজে লিপ্ত হওয়া, যা দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায় ও তাঁর অসন্তুষ্টি থেকে বাঁচা যায়। সহজ কথায় তাওবা হলো, সব পাপ কর্ম থেকে ফিরে এসে সৎকাজে প্রবৃত্ত হওয়া।

ইমাম নববী (রহ.) বলেন, উলামায়ে কেরাম বলেছেন, প্রতিটি গুনাহ থেকে তাওবা করা ওয়াজিব।

১.  তাওবাকারীকে গুনাহ থেকে বিরত থাকতে হবে।

২.  সে তার কৃত গুনাহের জন্য অনুতপ্ত হতে হবে।

৩.  তাকে আর কখনো গুনাহ না করার ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হতে হবে।

ইমাম নববী (রহ.) বলেন, সব গুনাহ থেকে তাওবা করা ওয়াজিব। কিছু গুনাহ তাওবা করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে। তবে বাকি গুনাহগুলো বাকি থেকে যাবে। কোরআন, সুন্নাহ ও উম্মতের ইজমার মাধ্যমে তাওবা করা ওয়াজিব প্রমাণিত হয়েছে।

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে মুমিনদের তাওবা করার আদেশ দিয়েছেন। যেমন এক আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘হে মুমিনরা, তোমরা সবাই আল্লাহর কাছে তাওবা করো। তাহলে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হবে।’ (সুরা নূর, আয়াত : ৩১)

অন্য আয়াতে বলেছেন, (তরজমা) তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। অতঃপর তাওবা করো।’ (সুরা হুদ, আয়াত : ৩)

তাওবা করার মাধ্যমে মুমিন বান্দা শুধু নিষ্পাপ ও গুনাহমুক্ত হয় না; বরং ইহকালীন ও পরকালীন বহু কল্যাণ এবং সুখ-শান্তিময় জীবন লাভ করেন। এখানে তাওবার কিছু উপকারিতা সংক্ষেপে উল্লেখ করা হলো।

তাওবা আগের সব গুনাহ দূর করে দেয় এবং জান্নাত দান করে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘হে মুমিনরা, তোমরা আল্লাহর কাছে খাঁটি তাওবা করো। আশা করা যায় তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের পাপ তোমাদের থেকে মোচন করে দেবেন এবং তোমাদের এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার নিচে নহর বহমান থাকবে। (সুরা তাহরিম, আয়াত : ৮)

এই আয়াতে আল্লাহ তাওবা করার আদেশ করেছেন, পাশাপাশি তার ফলাফল উল্লেখ করেছেন যে এর দ্বারা পাপ মোচন করে দেবেন এবং তাদের জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। তাওবা পাপকাজগুলোকে পুণ্য দ্বারা পরিবর্তন করে দেয়। আল্লাহ তাআলা বিভিন্ন পাপ ও সেগুলোর শাস্তি সম্পর্কে আলোচনা করার পর বলেছেন, ‘তবে কেউ তাওবা করলে, ঈমান আনলে এবং সৎকর্ম করলে আল্লাহ এরূপ লোকদের পাপরাশিকে পুণ্য দ্বারা পরিবর্তিত করে দেবেন। আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। আর যে ব্যক্তি তাওবা করে ও সৎকর্ম করে, সে মূলত আল্লাহর দিকে যথাযথভাবে ফিরে আসে।’ (সুরা ফুরকান, আয়াত : ৭০-৭১)

তাওবা দুনিয়ায় উত্তম জীবন দান করে। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কাছে গুনাহের ক্ষমা প্রার্থনা করো, অতঃপর তার কাছে তাওবা করো। তিনি তোমাদের এক নির্ধারিতকাল পর্যন্ত উত্তম জীবন উপভোগ করতে দেবেন এবং যে কেউ বেশি আমল করলে তাকে নিজের পক্ষ থেকে বেশি প্রতিদান দেবেন।’ (সুরা হুদ, আয়াত : ৩)

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে খাঁটি তাওবাকারী হিসেবে কবুল করুন। আমিন

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!