দিশারী ডেস্ক। ২৯ অক্টোবর, ২০২৪
মস্তিষ্কের রোগ স্ট্রোকের চিকিৎসা শুধু ঢাকাকেন্দ্রিক নয়। প্রান্তিক পর্যায়ে প্রশিক্ষিত চিকিৎসক ও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে। তবে এ রোগের জনসচেতনতা কম থাকায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের (নিনস) এক জরিপ অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে প্রতি হাজারে স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে ১১.৩৯ জন।
নিনসের যুগ্ম পরিচালক ও নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. বদরুল আলম বলেন, স্ট্রোকের চিকিৎসা শুধু ঢাকাকেন্দ্রিক নয়, প্রান্তিক পর্যায়ে এ রোগের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে। খিঁচুনি, প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া, বমি করা, জ্ঞানের মাত্রা কমে যায়—এমন উপসর্গ দেখা দিলে রোগীকে ঢাকায় না পাঠিয়ে নিকটতম হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া জরুরি।
——————————————————————————————————-
বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞদের মতে, গ্রামে স্ট্রোক বেশি হচ্ছে, শহরে কম। নারীর চেয়ে পুরুষের স্ট্রোকের ঝুঁকি দুই গুণ বেশি। নারী প্রতি হাজারে প্রায় আটজন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে থাকে। আর পুরুষ প্রতি হাজার ১৪ জন এই রোগে আক্রান্ত হয়
—————————————————————————————————-
কারণ প্রাথমিক পর্যায়ে যদি ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করা যায়, খিঁচুনি হলে সেটা বন্ধ করা যায়, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা যায় তাহলেই রোগী সুস্থ করে তোলা সম্ভব।
সারা বিশ্বে প্রতিবছর ১৫ মিলিয়ন মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে। তাদের মধ্যে পাঁচ মিলিয়ন মানুষ মৃত্যুবরণ করছে এবং পাঁচ মিলিয়ন মানুষ সারা জীবনের জন্য পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ তথ্য বলছে, দেশে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে ২০১৯ সালে মারা গিয়েছিল ৪৫ হাজার ৫০২ জন। ২০২০ সালে এই সংখ্যা বেড়ে ৮৫ হাজার ৩৬০ দাঁড়ায়।
বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞদের মতে, গ্রামে স্ট্রোক বেশি হচ্ছে, শহরে কম। নারীর চেয়ে পুুরুষের স্ট্রোকের ঝুঁকি দুই গুণ বেশি। নারী প্রতি হাজারে প্রায় আটজন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে থাকে।
আর পুরুষ প্রতি হাজার ১৪ জন এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। দেশের এমন পরিস্থিতির মধ্যে আজ মঙ্গলবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব স্ট্রোক দিবস। প্রতিবছর ২৯ অক্টোবর সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে দিবসটি পালিত হয়।
নিনসের ক্লিনিক্যাল নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক এম এস জহিরুল হক চৌধুরী বলেন, স্ট্রোক একটি প্রতিরোধযোগ্য রোগ। ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে স্ট্রোক প্রতিরোধ করা যায়। স্ট্রোকের রোগীর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো সময়। যত দ্রুত সম্ভব, স্ট্রোকের রোগীকে চিকিৎসকের কাছে আনতে হবে।
ডা. এম এস জহিরুল হক চৌধুরী বলেন, স্ট্রোকের কারণে প্যারালিসিসের (পক্ষাঘাত) মতো মারাত্মক উপসর্গ দেখা যায়, কিছু স্ট্রোকে রোগীর মৃত্যুও হতে পারে। স্ট্রোক হলে শরীরের যেকোনো একদিকে হাত-পা ও মুখমণ্ডল প্যারালাইজ হয়ে থাকে।
ব্রেইনের ভেতর স্ট্রোকটা যদি বাঁ দিকে হয়, তাহলে ডান দিকের হাত-পা এবং ডান দিকে স্ট্রোক হলে বাঁ দিকের হাত-পা প্যারালাইজ হয়ে থাকবে।
Leave a Reply