যেসব লক্ষণে গ্লুকোমা বোঝা যায়

  • আপডেট সময় বুধবার, নভেম্বর ১৩, ২০২৪
  • 19 পাঠক

ডা. ইফতেখার মো. মুনির
১৩ নভেম্বর, ২০২৪———————————-

দৃষ্টিশক্তি বিপন্ন করে, এমন একটি রোগ গ্লুকোমা। এটি চোখের অপটিক নার্ভকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। অপটিক স্নায়ু চোখ থেকে মস্তিষ্কে চাক্ষুষ চিত্রগুলো পাঠায়। চোখের ভেতরে চাপ বা ইন্ট্রাওকুলার প্রেশার বেড়ে গেলে এ স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত অপটিক স্নায়ুর কারণে দৃষ্টির ওপর শুধু নেতিবাচক প্রভাবই পড়ে না, কিছু ক্ষেত্রে অন্ধত্বও দেখা দিতে পারে।

বেশির ভাগ রোগীর ওপেন-অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমা হতে দেখা যায়। এটি ধীরে ধীরে দৃষ্টিশক্তি হ্রাস করে। এ ছাড়া এর কোনো লক্ষণ বা উপসর্গ থাকে না। আপনি যদি দৃষ্টিশক্তিতে কোনো পরিবর্তন দেখেন, তবে কারণ শনাক্ত করতে দ্রুত একজন চক্ষুবিশেষজ্ঞের কাছে যাবেন।

গ্লুকোমা বংশগত কারণে হতে পারে। এ ছাড়া উচ্চ রক্তচাপ, চোখের সংক্রমণ, চোখে ব্লক ড্রেনেজ, প্রদাহ ইত্যাদির কারণে হতে পারে। কোনো কারণে চোখে অস্ত্রোপচার করা হলেও হতে পারে গ্লুকোমা।

লক্ষণ ও কারণ

চোখে তীব্র ব্যথা, বমি বমি ভাব, চোখ লালচে হওয়া, দৃষ্টির ব্যাঘাত বা ঝাপসা দেখা, খুব বেশি আলোতে রঙিন রিং দেখা।

গ্লুকোমা বংশগত কারণে হতে পারে। এ ছাড়া উচ্চ রক্তচাপ, চোখের সংক্রমণ, চোখে ব্লক ড্রেনেজ, প্রদাহ ইত্যাদির কারণে হতে পারে। কোনো কারণে চোখে অস্ত্রোপচার করা হলেও হতে পারে গ্লুকোমা।

পরীক্ষা

গ্লুকোমা হয়েছে কি না, তা একজন চক্ষুবিশেষজ্ঞ রোগীর অপটিক স্নায়ু পরীক্ষা করে বুঝতে পারেন। টোনোমেট্রি, পেরিফেরাল দৃষ্টিশক্তির ক্ষতি পরীক্ষার জন্য একটি ভিজ্যুয়াল ফিল্ড টেস্ট করা হয়। সঙ্গে চোখের চাপ পরীক্ষায় একটি টেস্ট করা হয়। যদি চিকিৎসক মনে করেন আপনার গ্লুকোমা আছে, তবে অপটিক স্নায়ুর একটি বিশেষ ইমেজিং পরীক্ষা করার পরামর্শ দিতে পারেন।

চিকিৎসা

গ্লুকোমার চিকিৎসা আমাদের দেশেই খুব ভালো হয়। সাধারণত চোখের ড্রপ ও মুখের ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা হয়।

প্রয়োজনে চোখের তরল চাপ কমাতে চিকিৎসক আপনাকে লেজার অস্ত্রোপচার বা মাইক্রোসার্জারির পরামর্শ দিতে পারেন। ইন্ট্রাওকুলার চাপ (চোখের তরল চাপ) কমাতে নিয়মিত ব্যবহারযোগ্য চোখের ড্রপ দেয়া হয়। মুখে খাওয়ার ওষুধও দেয়া হয়, যেমন কার্বনিক অ্যানহাইড্রেজ ইনহিবিটর ও বিটা ব্লকার। এগুলো তরল উৎপাদন কমাতে বা নিষ্কাশন বাড়াতে ব্যবহার করা হয়।

লেজার অস্ত্রোপচার ওপেন-অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমার ক্ষেত্রে চোখ থেকে তরলপ্রবাহ বাড়াতে সাহায্য করে। এ ছাড়া মাইক্রোসার্জারির মাধ্যমে তরলনিষ্কাশনে চিকিৎসক একটি নতুন চ্যানেল তৈরি করে দিতে পারেন। ট্র্যাবিকিউলেক্টমি নামে এটি পরিচিত। এ পদ্ধতি প্রায়ই পুনরাবৃত্তি করার প্রয়োজন হয়। এ পদ্ধতির সঙ্গে কিছু ঝুঁকি আছে, যেমন রক্তপাত, সংক্রমণ ও সাময়িক দৃষ্টিশক্তি হ্রাস।

ডা. ইফতেখার মো. মুনির: অধ্যাপক ও গ্লুকোমাবিশেষজ্ঞ, বাংলাদেশ আই হসপিটাল, মালিবাগ শাখা, ঢাকা।

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!