নিজস্ব প্রতিনিধি
————–
নোয়াখালী-৪ (সদর-সুবর্ণচর) আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন চাওয়ার আকাঙ্খা প্রকাশ করলেন।
শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) সন্ধ্যেয় কবিরহাট উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়নের নিজ বাড়িতে আয়োজিত ইফতার ও দোয়ার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি নোয়াখালী ৫ আসন থেকে নির্বাচন করার এ আকাঙ্খা প্রকাশ করেন। ।
এ সময় একরাম চৌধুরী বলেন, আমার বাড়ি কবিরহাট ; এ জন্য আমি অনেক বেশি গর্ববোধ করি। এটা আমার হৃদয়। তিনি ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, কবিরহাটের মানুষ ভোট দিয়েছে। কিন্তু আপনারা কবিরহাটের মানুষকে সে সম্মান দেখাচ্ছেন ! তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত কি হবে, আমি জানিনা। তিনি কবিরহাটের লোকজনে প্রতি আবদার রেখে বলেন, তবে যদি আপনারা চান ; আমি নোয়াখালী-৪ ও নোয়াখালী-৫ দুই আসন থেকে নমিনেশন চাইবো। সিদ্ধান্ত জননেত্রী শেখ হাসিনা দেবেন।
একরাম মনোবেদনা প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, আমার কি মনে ইচ্ছে করেনা আমার নিজ এলাকার মানুষকে ভালোবসি ! তিনি জনতাকে লক্ষ্য করে বলেন, আপনাদেরকে ভালোবাসার জন্য দিছি। কই আপনারা ভালোবাসা দিচ্ছেন না। আপনারা যদি আমাকে নমিনেশন নেয়ার জন্য অনুমতি দেন, তাহলে আমাকে হাত তুলে দেখান।
ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনাকে বাবার পরে স্থান দিয়েছি। কিন্তু আপনিতো ধরে রাখতে পারেননি। আপনার আপন ভাই তাঁর কথায় আপনি আমাকে সাধারণ সম্পাদক থেকে বাদ দিয়ে দিলেন। আমাকে বাদ দেননি ; সারা নোয়াখালী আওয়ামী লীগ পরিবারকে তছনছ করে দিয়েছেন। আজকে যাকে তাকে আহ্বায়ক বানিয়ে দিয়েছেন। আহ্বায়ক হয়ে শুধু বহিষ্কার, বহিষ্কার। আরে কত বহিষ্কার করবেন!
তিনি বলেন, কবিরহাটের মানুষ আমাকে নেতা বানিয়েছে। আমার কি অপরাধ। আমাকে এভাবে অপমানজনকভাবে সরানো হলো। আমি ২৬টা খুন করছি, আমার ছেলে অস্ত্র নিয়ে চলে। কে এটা বলছে, আমি বলতে চাইনা। অথচ এ দেশে বিচার নেই।
একরাম বলেন, কাদের ভাই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আমি যেহেতু আওয়ামী লীগ করি। আমি মাইকের সামনে কিছু বলবনা। কিন্তু আমার প্রশ্নটা হলো আপনার স্ত্রীকে যে অসৌজন্যমূলক কথাবার্তা বলা হইছে। এটার বিচারও কি বাংলাদেশের মানুষ পাবেনা।
এমপি একরাম আরও বলেন, নিজ স্বার্থে যারা মিথ্যে কথা বলে বক্তৃতা দেয় ; আমি মনে করি তাদের কাছে আর কবিরহাটের মানুষ যাবেনা। যে লোক আমার সামনে বসত না। সে লোক অসংখ্য বিশ্রী বিশ্রী কথা বলে। এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন বলেও মন্তব্য করেন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সামছুদ্দিন জেহান, কবিরহাট উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুন্নাহার শিউলী, নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোমিন বিএসসি প্রমূখ।
এদিকে, একরামুল করিম চৌধুরীর এমন বক্তব্যে নোয়াখালী ৪ আসনের আওয়ামী লীগের প্রায় নেতা, কর্মী ও সমর্থকরা বিরুপ মন্তব্য করেছেন। তারা বলেন, তিনি কবিরহাটকে ভালবাসেন বলে গত ১৫টি বছর সদর ও সুবর্ণচরবাসীকে কবিরহাটের বাড়িতে রাজনীতির নামে ওঠবস করিয়েছেন। সদর ও সুবর্ণচনে জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাঁর কাছে যেতে এ অঞ্চলের মানুষকে অস্যংখ্য সমস্যার পথপাড়ি দিতে হয়েছে।
তারা বলেন, তিনি সত্য কথা মুখ ফসকে বলে ফেলছেন। তাদের দাবি একরামুল সদর ও সুবর্ণচরবাসীকে আসলে ব্যবহার করছেন নিজের পদ পরিচয় ও ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির জন্যে।
এছাড়া, বসুরহাট পৌরমেয়র আবদুল কাদের মীর্জার ইতোপেূর্বের কথাগুলোয় কেহ আহত হলেও মূলত মীর্জা সত্য কথা বলছেন বলে সাধুবাদ জানান তারা।
Leave a Reply