বিএনপি বিরোধী ইসলামী জোটে হাসিনার সহযোগিরাও !

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৫
  • ৩৩ পাঠক

দিশারী ডেস্ক।। ২৮ আগস্ট ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ।।

বিএনপি’র সঙ্গে নির্বাচনী জোটে যেতে চায় অন্তত ছয়টি ইসলামী দল। ইতোমধ্যে বিএনপি’র নীতিনির্ধারণী ফোরামের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ হয়েছে এসব দলের দায়িত্বশীল নেতাদের। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরই আনুষ্ঠানিকভাবে এই জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।

সব ইসলামী দলের ভোট এক বাক্সে নেয়ার লক্ষ্য নিয়ে জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনসহ কয়েকটি ইসলামী দল কাজ করছে। তবে ভোটের মাঠে সব ইসলামী দল একসঙ্গে থাকার অবস্থায় নেই। কিছু দল নিজেদের কৌশলের অংশ হিসেবে বিএনপি এবং অন্যান্য দলের সঙ্গে জোট করার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এ অবস্থায় ইসলামী দলগুলোর জোট হলেও তারা একাধিক ফ্রন্টে অবস্থান করেই ভোটে অংশ নিচ্ছে।

সূত্রমতে, আসন্ন নির্বাচনে ইসলামী দলগুলোর ভোট একবাক্সে নেয়ার আওয়াজ ওঠে ৫ই আগস্টের পটপরিবর্তনের পর থেকে। এজন্য উদ্যোগী ভূমিকায় নামেন শেখ হাসিনার সময়ে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নেয়া ইসলামী আন্দোলনের আমীর মুফতি সৈয়দ রেজাউল করীম (পীর চরমোনাই)। তাকে সমর্থন যোগান জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান। এই দুই নেতার সম্মিলিত উদ্যোগ অনেকটা সফলও হয়েছে বলে অনেকের অভিমত।

গত জুলাই মাসে রাজধানীর সোহ্‌রাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী আন্দোলন ও জামায়াতে ইসলামীর দুই দুইটি মহাসমাবেশে যার প্রতিফলন দেখা যায়। ওই দুই দলের ব্যানারে মহাসমাবেশ দু’টি অনুষ্ঠিত হলেও ইসলামী এবং সমমনা অন্তত ১০টি দলের শীর্ষ নেতারা এতে বক্তব্য রাখেন। এ সময় ওইসব দলের বক্তারা আগামী নির্বাচনে সব ইসলামী এবং সমমনা দলের ভোট এক বাক্সে দেয়ার অঙ্গীকার করেন।

তবে, বিভক্ত বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন এই উদ্যোগের বাইরে আছে। এসব অনিবন্ধিত দল বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন জোটে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

সংশ্লিষ্ট সুত্র মতে, বিএনপির সঙ্গে জোটে যাওয়ার চেষ্টায় থাকা এসব ইসলামী দলের কারোই নিবন্ধন নেই। এসব দলের প্রায় সকলেই নাম স্বর্বস্ব কিংবা প্যাড সর্বস্ব একাধিক অংশে বিভক্ত। জাতীয় রাজনীতিতে তাদের ভূমিকাও উল্লেখ করার মত নয়। তারপরও একটি বৃহৎ রাজনৈতিক জোটে যেতে পারলে ওই জোটের পরিধি বাড়কে বৈ কমবে না এমনটাই মনে করেন তারা।

———————————————————————————————————-

ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুর রকিব বলেন, আমরা অতীতেও বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন জোটে ছিলাম এখনো আছি। বর্তমানে আমরাই ইসলামী ঐক্যজোটের মূলধারায় আছি।

ওদিকে নেজামে ইসলাম পার্টির নির্বাহী সভাপতি মাওলানা একেএম আশরাফুল হক বলেন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মূলধারা আমাদের সঙ্গে আছে। নাম এবং প্যাড স্বর্বস্ব যে দল আছে তাদের সঙ্গে নেজামে ইসলাম পার্টির কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি বলেন, মঞ্চ ময়দানে আমাদের রাজনৈতিক তৎপরতাই দৃশ্যমান। আর কারও কোনো তৎপরতা নেই দাবি করেন তিনি।

বিএনপি’র সঙ্গে যাওয়ার চেষ্টায় থাকা ইসলামী দলগুলোর নেতৃত্বে আছেন বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, নির্বাহী সভাপতি মাওলানা একেএম আশরাফুল হক, মহাসচিব মাওলানা মুমিনুল ইসলাম। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী।

ইসলামী ঐক্যজোট, চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুর রকিব, মহাসচিব মাওলানা আব্দুল করিম। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, সভাপতি মাওলানা আব্দুর রহিম ইসলামাবাদী, সেক্রেটারি মাওলানা মহিউদ্দিন ইকরাম।

এছাড়া বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের একটি অংশ বিএনপি’র সঙ্গে জোটে যেতে যাওয়ার বেশ সম্ভাবনা আছে বলে সূত্র জানায়।

——————————————————————————————————

খেলাফত মজলিসের অবস্থান এখনও স্পষ্ট নয়। দলটির আমীর মাওলানা আব্দুল বাসিত আজাদ, মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের। ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশের চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুল কাদের, মহাসচিব মুফতি সাখাওয়াত হোসেন এর পক্ষ স্বতন্ত্র ইসলামী জোটের পক্ষে আছে। বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টিও এই পক্ষে আছে।

বিএনপি’র বাইরে থেকে নির্বাচন করার পক্ষে থাকা দলের মধ্যে আছে জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন। ইসলামী ঐক্যজোটও আছে এই তালিকায়। দলটির চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী, মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ। ৫ আগস্টের পর চেয়ারম্যান ও মহাসচিব আত্মগোপনে চলে গেলে মাওলানা আব্দুর রশিদ মজুমদার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দলটি ২৪-এর ডামি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় অধিকাংশ নেতৃবৃন্দ আত্মগোপনে রয়েছেন।

 

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!