মোহাম্মদ সহিদ উল্লাহ (বাচ্চু)।। ৩১ আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ।।
আবদুর রহমান। পেশায় জ্যেষ্ঠ আইনজীবী। নোয়াখালীর সর্বস্তরের মানুষের খাতায় একজন সৎ, সাহসী ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতিক হিসেবে সমাদৃত তিনি।
নোয়াখালী জেলা সদরের ধর্মপুর ইউনিয়নের বীরমুক্তিযোদ্ধা মরহুম হাজী ইদ্রিস মিয়া প্রকাশ যত্রিক হাজী এবং মরহুম আমেনা খাতুনের কনিষ্ঠ সন্তান।
শল্যাঘটাইয়া গ্রামে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে জেলার ঐতিহ্যবাহী ব্রাদার্স আন্দ্রেজ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৭৬ সালে কৃতিত্বের সাথে এসএসসি (মাধ্যমিক) পাস করেন। নোয়াখালী সরকারী কলেজ থেকে ১৯৭৮ সালে এইচএসসি ( উচ্চ মাধ্যমিক) এবং ১৯৮১ সালে বিএ ( স্মাতক) পাস করেন। ১৯৮৪-৮৫ শিক্ষা বর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি পাস করেন।
————————————————————————————————————-
————————————————————————————————————-
৩০ অক্টোবর, ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে নোয়াখালী আইনজীবী সমিতিতে যোগদান করেন তিনি। বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টে আইনজীবী হিসেবে ২০০৪ সালে এনরোলমেন্ট হন।
ছাত্রজীবন থেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের একজন নিবেদিত কর্মী হিসেবে সুপরিচিত। বৃহত্তর নোয়াখালীর সমন্বয়ক ও সাবেক এমপি মরহুম মোস্তাক আহমদ ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. শাহজাহানসহ জ্যেষ্ঠ নেতাদের নির্দেশনা মোতাবেক দলের সকল কর্মসূচি পরিপালন ও দলের জনপ্রিয়তা বাড়াতে নিরলসভাবে কাজ করেন।
নোয়াখালীর সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে ১৯৯১ থেকে ২০১৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৭ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে ৬নং নোয়াখালী ইউনিয়নে বিপুল ভোটের ব্যবধানে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০১১ থেকে ৭ নং ধর্মপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ২০১৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত।
নোয়াখালী জজকোর্টে ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এপিপি এবং ২০০১ সাল থেকে ২০০৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত পিপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। নোয়াখালী আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ২০০৮ খ্রিস্টাব্দে সাধারণ সম্পাদক এবং ২০১৬ ও ২০১৮ খ্রিস্টাব্দে দুই বার সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০০৯ এবং ২০১৬ খ্রিস্টাব্দে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
—————————————————————————————————————-
দৈনিক দিশারী’র সম্পাদক ও প্রকাশক আকাশ মো. জসিম বলেন, এডভোকেট আবদুর রহমান নিঃসন্দেহে একজন সদাচারী, পরোপকারী ও সমাজহিতৈষী মানুষ। তাঁর রাজনৈতিক জীবন ছাড়াও, পেশাগত জীবনের ব্যক্তিত্ব, সততা, সাহস, সংগ্রাম আর সাফল্যতায় অবিভূত হয়ে আইনপেশাকে সম্মানের চোখে দেখে তরুণদের অনেকেই এ পেশায় যোগ দিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, আবদুর রহমান রাজনৈতিক এবং পেশাগত জীবনে জেলায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকার সময়ে কোন ধরনের বিন্দুমাত্র অসাধুতা, যাকে কোনভাবেই স্পর্শ করার স্পর্ধা পায়নি।
—————————————————————————————————————-
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, ডায়বেটিস সমিতি, পরিবার পরিকল্পনা সমিতিসহ অসংখ্য সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত। বর্তমান নোয়াখালী জেলা জামে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন আবদুর রহমান।।
আলোকিত সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্যে পারিবারিক ও নিজ উদ্যোগে এলাকায় অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেন। এরমধ্যে অন্যতম নোয়াখালী বাংলাবাজার উচ্চ বিদ্যালয় (প্রতিষ্ঠাতা), উত্তর ওয়াপদা উচ্চ বিদ্যালয় (দাতা), ভাটিরটেক উচ্চ বিদ্যালয় (সহায়তাকারী), হাজীর হাট উচ্চ বিদ্যালয়, হাজীর হাট মাদ্রাসা, পুর্ব ভাটিরটেক সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গাজীর খেওয়া জামেয়া রহমানিয়া মাদ্রাসা।
ব্যক্তিগত জীবনে ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে চট্টগ্রাম জেলার সন্ধীপ উপজেলার মাইটভাঙ্গা গ্রামের নিবাসী মরহুম একেএম ফাইজুল আলিম ( কালাম সাহেব) এর কন্যা এবং সাবেক জ্বালানি, স্বাস্থ্য ও ইআরডি সচিব বর্তমানে রাষ্ট্রায়ত্ব বিপিসির পদ্মা অয়েল কোম্পানির চেয়ারম্যান একেএম জাফর উল্লাহ খাঁনের বোন ফারজানা পারভীনের সাথে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন।
তিন পুত্রের জনক এডভোকেট আবদুর রহমান। বড় পুত্র ইউছুফ রহমান (রাফী) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে উচ্চ শিক্ষা অর্জনে আমেরিকায় পাড়ি জমান। আমেরিকায় এখন স্ত্রীসহ বসবাস করছেন।
মেঝো পুত্র তানভীর রহমান (রাব্বী) ঢাকার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে চট্টগ্রামে তরুন উদ্যোক্তা হিসেবে ব্যবসা পরিচালনা করছেন।
ছোট পুত্র তামজীদুল রহমান রাহাত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে এখন ঢাকায় বেসরকারি ইউনাইটেড ফাইন্যান্স কোম্পানিতে উর্ধতন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
২০০১ সালে সদরে প্রতিষ্ঠিত নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের লক্ষ্যে জায়গা নির্বাচন ও ১০০ একর ভুমি অধিগ্রহণে স্থানীয় সাংসদ আলহাজ্ব মো. শাহজাহানের নির্দেশে অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। তাঁদের অক্লান্ত ও প্রাণান্তকর চেষ্টার ফলে একটি স্বার্থান্বেষীমহল এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি স্থানান্তরে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা করেও ব্যর্থ হল।
অবশেষে ২০০৩ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া জেলার শীর্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি উদ্বোধন করেছিলেন। জেলার বর্ষীয়ান, বিনয়ী ও সদালাপী এ রাজনীতিবিদ ২০০৯ এবং ২০১৪ খ্রিস্টাব্দে নোয়াখালী সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন প্রার্থী ছিলেন। বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. শাহজাহানের অনুরোধে প্রার্থীতা থেকে সরে আসেন।
নোয়াখালী সদরের ১৩টি ইউনিয়ন এবং নোয়াখালী পৌরসভার জনগনের কাছে “এডভোকেট রহমান ভাই” হিসেবে খুবই জনপ্রিয়। বিগত ১৭ বছর দলের অসহায়, নির্যাতিত ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের পাশেই ছিলেন তাদের রহমান। স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া এবং ত্যাগীদের প্রিয় এই মানুষটিকে নিয়ে নোয়াখালীর জনগন স্বপ্ন দেখছে।
তিনি ভারত, থাইল্যান্ড ও সৌদি আরবসহ কয়েকটি দেশ ভ্রমন করেন। মহান আল্লাহর কাছে তাঁর সুস্বাস্থ্য ও নেক হায়াত কামনা করছেন নোয়াখালীর সর্বস্তরের জনগণ।
Leave a Reply