দিশারী ডেস্ক
———
অ্যাসপিরিন বা অ্যাসিটিসালিসিলিক অ্যাসিড (এএসএ) খুবই সহজলভ্য ওষুধ। ঘরে ঘরে থাকা এই স্বল্পমাত্রার ব্যাথানাশক হুট হাট চলে আসা জ্বর আর তার সঙ্গের মাথা ব্যথা তাড়াতেই ব্যবহার করা হয়। অ্যাসপিরিনের প্রস্তুতিতে স্টেরয়েডের সংশ্রব নেই। অ্যাসপিরিনের ব্যবহারে অচেতন না করেও এর দ্বারা ব্যথা দূর করা যায় ও জ্বর কমানো যায়।
সম্প্রতি নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে শুধু ব্যাথানাশকই নয়, অ্যাসপিরিন দিয়ে দাঁতের ক্ষয় বন্ধ করা যায়। শুধু যে ক্ষয় রোধ করে তাই না, এটি ইতিমধ্যে হয়ে যাওয়া ক্ষতও ধীরে ধীরে বন্ধ করে দেয়। বেলফাস্টের কুইন্স ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক অ্যাসপিরিনের ওপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেই চমকপ্রদ এই তথ্য পেয়েছেন। ভবিষ্যতে অ্যাসপিরিন দাঁত ক্ষয় রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এমনটাই মনে করছেন তারা। এমনকি দাঁতের ডাক্তারের কাছে গিয়ে ক্ষয়ে যাওয়া দাঁতের ক্ষতপূরণে ফিলিং করানোরও প্রয়োজন হবে না, যেটা মোটামুটি ব্যয়বহুল চিকিৎসা পদ্ধতি।
গবেষণা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, কুইন্স ইউনিভার্সিটির প্রাথমিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, অ্যাসপিরিন দাঁতের দেয়াল পুনরায় গজাতে সাহায্য করে ও দাঁতের ক্ষত বন্ধ করে।
সারা পৃথিবীতে দাঁতের প্রধানতম রোগ হলো দাঁত ক্ষয়। যা দাঁতের স্নায়ু প্রদাহ ও দাঁত ব্যথা শুরুর মূল কারণ। আর দাঁত ক্ষয়ের সবচেয়ে প্রচলিত চিকিৎসা হল ফিলিং করানো।
ব্রিটিশ ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশনের ২০১৬ সালের তথ্যানুযায়ী; উত্তর আয়ারল্যান্ডের ১৫ বছর বয়সীদের মধ্যে ৭২ শতাংশের দাঁত ক্ষয় হয়ে থাকে। এর তুলনায় ইংল্যান্ডের ৪৪ শতাংশ এবং ওয়েলসে ৬৩ শতাংশ মানুষের দাঁত ক্ষয় হয়।
দাঁতের স্বাভাবিকভাবেই সীমিত পুনর্জন্মের ক্ষমতা আছে। দাঁতের একটি পাতলা ব্যান্ড আছে, যেটা ঠিক এনামেল এর নিচের দিকে অবস্থিত। যদি এনামেল ভেদ করে সেই অংশে দাঁতের ময়লা ছড়িয়ে পড়ে তাহলে দাঁত ক্ষয় হওয়া শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে তা বাড়তে থাকে।
প্রফেসর ইখলাস এল করিম হলেন কুইন্স ইউনিভার্সিটি, বেলফাস্টে এর মেডিসিন, ডেন্টিস্টি ও বায়োমেডিক্যাল সায়েন্স বিভাগের সিনিয়র লেকচারার।
তিনি দাঁতের ক্ষয়পূরণ করে এমন কোষের ওপর নিবিড় পর্যবেক্ষন এবং গবেষণা শুরু করেন। কিভাবে দাঁতের ডাক্তাররা ক্ষতিগ্রস্ত দাঁতের পুনর্জন্ম এবং মেরামত করতে পারেন তা নিয়েও আলোচনা করেন।
ব্রিটিশ সোসাইটি ফর ওরাল এবং ডেন্টাল রিসার্চ তাদের বার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে গত বৃহস্পতিবার তাদের গবেষণার কাগজ দেখিয়েছেন। যেখানে বলা হচ্ছে অ্যাসপিরিন দাঁতের ক্ষয়পূরণের জন্য যে বিশেষ কোষ রয়েছে তার কার্যকারিতা বাড়িয়ে দেবার ক্ষমতা রাখে। ফলে অ্যাসপিরিনের ব্যাবহারে হারানো দাঁত নিজের কাঠামো পুনর্ব্যবহার করে নিজে নিজেই ক্ষয় পূরণ করে নেয়। বাড়তি ফিলিংয়ের দরকারই পড়ে না।
Leave a Reply