কেন কানাডা ছেড়ে যাচ্ছেন অন্য দেশে ?

  • আপডেট সময় সোমবার, ডিসেম্বর ১১, ২০২৩
  • 96 পাঠক

দিশারী ডেস্ক। ১১ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ।

উত্তর আমেরিকার দেশ কানাডা। বিশ্বের অনেক মানুষের কাছে এটি একটি স্বপ্নের দেশ। অনেকেই নিজের সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গা থেকে পাড়ি জমায় কানাডায়। তবে এখন পরিস্থিতি যেন উল্টে গেছে। ভেঙেছে তাদের ভ্রম। এখন অনেকেই সেই স্বপ্নের কানাডা ছেড়ে চলে যাচ্ছে অন্য দেশে।

সম্প্রতি সংবাদসংস্থা রয়টার্সে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালের প্রথম ছয় মাসে ৪২ হাজার মানুষ কানাডা ছেড়ে চলে গেছে। ২০২২ সালে কানাডা ছাড়ে ৯৩ হাজার ৮১৮ জন। এর আগের বছর ৮৫ হাজার ৯২৭ জন দেশটি ছেড়েছে বলে সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে।

অভিবাসীদের কানাডা ত্যাগের সংখ্যা গত দুই দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায় ২০১৯ সালে। অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করে এমন প্রতিষ্ঠান ‘ ইনস্টিটিউট ফর কানাডিয়ান সিটিজেনশিপ (আইসিসি) ’ সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ কথা জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষ কানাডা ছেড়েছে ২০১৯ সালে। পরে কোভিড মহামারীর জন্য কানাডা ছেড়ে যাওয়া মানুষের সংখ্যা কিছুটা কমে এলেও বর্তমানে এই সংখ্যা আবারও দ্রুত বাড়তে শুরু করেছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে অন্য দেশ থেকে কানাডায় প্রবেশ করেছে ২ লাখ ৬৩ হাজার মানুষ। সেই তুলনায় দেশটি ছেড়ে যাওয়া মানুষের সংখ্যা অনেক কম হলেও এই প্রবণতা ভাবিয়ে তুলেছে পর্যবেক্ষকদের।

রয়টার্স জানায়, অভিবাসনের ওপর ভিত্তি করেই গড়ে ওঠেছে কানাডা। অথচ সেই দেশটিই এখন ছেড়ে চলে যাচ্ছে বহু মানুষ। গত ৮ বছরে কানাডায় ২৫ লাখ মানুষ স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পেয়েছে। তবে জীবনযাত্রার উঁচু ব্যয়ের কারণে দেশটি ছেড়ে চলে গেছে অনেকে।

২০২২ সালে হংকং থেকে শরণার্থী হয়ে কানাডায় পাড়ি জমানো ২৫ বছর বয়সী ক্যারা বলেন, কখনওই ভাবিনি যে পশ্চিমা দেশগুলোতে আপনি শুধুমাত্র একটি কক্ষের ভাড়া জোগাড় করতেই হিমশিম খাবেন।

ক্যারা আরও জানান, বেসমেন্টে একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে থাকেন তিনি। এর জন্য তাকে ৬৫০ কানাডিয়ান ডলার পরিশোধ করতে হয় (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫৩ হাজার টাকা)। এর ফলে তার মাসিক আয়ের ৩০ শতাংশই চলে যায় বাসা ভাড়ায়। বাকি খরচ মিটিয়ে মাস শেষে তার কোনও সঞ্চয় থাকে না। অথচ হংকংয়ে থাকা অবস্থায় তিনি যে অর্থ আয় করতেন, তার এক-তৃতীয়াংশ সঞ্চয় করা যেত।

উল্লেখ্য, গত মাসে ট্রুডো সরকার নতুন নীতি চালু করেছে। এর আওতায় ২০২৫ সাল থেকে সর্বোচ্চ ৫ লাখ মানুষ কানাডায় নতুন বসতি স্থাপন করতে পারবেন। এই নীতির উদ্দেশ্য হল- আবাসন খাতের ওপর চাপ কমানো। তবে অনেকেই মনে করছেন, এই পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়। পদক্ষেপটি নিতে অনেক দেরি হয়ে গেছে । সূত্র: রয়টার্স।

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!