——————————
খাদ্যনালীর ক্যান্সার হলো এক ধরনের ম্যালিগন্যান্ট টিউমার যা অন্ননালীর যে কোনো অংশে অথবা পরিপাকতন্ত্রে হয়ে থাকে এবং চিকিৎসা নিতে বিলম্ব করলে পরবর্তী পর্যায়ে শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে। জরিপে প্রকাশ সারা বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ৩ কোটি মানুষ এই ক্যান্সারে মারা যান। পুরুষ এবং মহিলা ভেদে মৃত্যুর হার ১:১ থেকে ১৭:১।
সাধারণত বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে। সাধারণত ৩৫ বছর বয়সের পর এই ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে তবে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বয়স হলো ৬০-৬৯। তাই শুরুতে লক্ষণ দেখা মাত্রই চিকিৎসা শুরু জরুরি। বিভিন্ন কারণে এই ক্যান্সার হয়ে থাকে, যেমন- শারীরিক অবস্থা, খাদ্যাভ্যাস, বংশগত কারণ ইত্যাদি। মূলত অস্বাস্থ্যকর খাদ্যগ্রহণ এবং অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন পদ্ধতি এর জন্য দায়ী।
লক্ষণ সমূহ
১. খেতে গেলে আনেক সময় বুকে জ্বালাপোড়া বা সূঁচের মতো কোনো কিছু অনুভূত হওয়া।
৩. খাবার খেতে অসুবিধা এবং সঙ্গে বমি হওয়া, পেটে ব্যথা করা।
৪. ওজন অতিমাত্রায় হ্রাস পাওয়া।
৫. খাবার খাওয়ার সমস্যার কারণে পুষ্টিহীনতা দেখা যায় এবং শরীর শুকিয়ে গিয়ে দুর্বল হয়ে পড়ে।
তবে যে উপরের লক্ষণগুলো শুধু খাদ্যনালীর ক্যান্সারকেই নির্দেশ করে না, অন্য রোগও নির্দেশ করতে পারে। তাই এ রকমটি হলে বা এই লক্ষণগুলো দেখা মাত্রই দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
খাদ্যনালীর ক্যান্সার কিনা তা নির্ণয়ে পরীক্ষা সমূহ
১. ইবারেন্ডস্কপি: হজম তন্ত্রের রোগ নির্ণয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়।
২. ডাইজেসটিভ ট্র্যাক্ট এন্ডসকোপিক আলট্রাসনোগ্রাফি: খাদ্যনালীর প্রাচীরে কোনো ক্ষত থাকলে তা শনাক্ত করা যায়। এছাড়া লসিকাগ্রন্থি অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে গেলে তাও শনাক্ত করা যায় এবং খাদ্যনালীর প্রাচীরে ঠিক কোনো স্থানে ক্ষত আছে তাও জানা যায়।
৩. এক্স-রে ব্যারিয়াম মিল: ক্ষত স্থানের আকৃতি ও অবস্থান সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায় এবং কোনো ক্যান্সার সেল আছে কিনা তাও জানা যায়।
৪. সিটি স্ক্যান: এটি ক্যান্সার নির্ণয় করতে না পারলেও খাদ্যনালী এবং এর সংলগ্ন মেডিয়েসটিনাম এর সম্পর্ক নির্ণয়ে সাহায্য করে।
৫. এসোফ্যারিঙ্গিয়াল এক্সফ্লয়টেটিভ সাইটোলজি এক্সামিনেশন: সহজ সুবিধাজনক এবং স্বল্পব্যথা বিশিষ্ট এই থেরাপি খাদ্যনালীর ক্যান্সার দ্রুত নির্ণয়ের জন্য একটি পরীক্ষা।
ক্যান্সারের বিভিন্ন পর্যায়
স্টেজ-০ বা শুরু
এই পর্যায়ে ক্যান্সার কোষ অন্যান্য কোষের সঙ্গে স্বাভাবিক অবস্থায় কোনো ধরনের ম্যালিগন্যান্ট ছাড়াই খাদ্যনালীর বহিঃত্বকে অবস্থান করে ।
স্টেজ ১:
এই পর্যায়ে ম্যালিগন্যান্ট কোষ বা ক্যান্সার কোষ বহিঃত্বক ভেদ করে ভেতরে প্রবেশ করে এবং শ্লৈষ্মিক ঝিল্লীর নিম্ন স্তরে পৌঁছায় কিন্তু পেশীর স্তর তখনও ভেদ করে না।
স্টেজ ২:
এই পর্যায়ে ক্যান্সার লসিকাগ্রন্থিতে প্রবেশ করে কিন্তু অন্যকোনো প্রত্যঙ্গে ছড়ায় না।
স্টেজ ৩:
এই পর্যায়ে ক্যান্সার খাদ্যনালী সংলগ্ন শ্বাসনালীতে আক্রমণ করে কিন্তু এর সংলগ্ন লসিকাগ্রন্থি সুরক্ষিত থাকে এবং আশেপাশে তখনও ক্যান্সার ছড়ায় না।
স্টেজ ৪:
এই পর্যায়ে ক্যান্সার রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে হাড়, লিভার এমনকি মস্তিষ্কেও ছড়িয়ে পড়ে।
চেম্বার- ফরাজী হাসপাতাল, বনশ্রী রামপুরা, ঢাকা।
সেল-০১৭১৩-০০৭৩১৮
Leave a Reply