ডা. অনুপম পোদ্দার
——————
দাঁতের চিকিৎসায় ডায়াগনসিস খুবই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভালো ডায়াগনসিস হলে রোগের চিকিৎসাও সহজ হয়।
দাঁতের প্রধান রোগসমূহ :
♦ দন্তক্ষয় রোগ (ডেন্টাল ক্যারিজ)
♦ দন্তমজ্জার রোগ (পালপাইটিস)
♦ মাড়ির প্রদাহ (জিএনজি ভাইটিস)
♦ পায়োরিয়া (পেরিওডন্টাইটিস)
দন্তক্ষয় রোগের সমস্যাসমূহ :
♦ দাঁতের উপরিভাগে প্রথমে সাদা স্পট দেখা যায়
♦ পরবর্তী সময়ে সাদা স্পট কালো হয়ে যায়
♦ দাঁতের মধ্যে গর্ত তৈরি হয়
♦ খাদ্য জমে যায় গর্তের ভেতর
♦ দুর্গন্ধ হয় মুখে
দন্তমজ্জা রোগের সমস্যাসমূহ :
♦ মুখে দুর্গন্ধ হয়
♦ দাঁতের তীব্র ব্যথায় রাতের ঘুম পর্যন্ত ভেঙে যায়
♦ খাদ্য জমে যায়
♦ গর্ত দীর্ঘস্থায়ী হলে ব্যথা কম হয়
মাড়ির প্রদাহ রোগের সমস্যাসমূহ :
মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়ে, সকালে ঘুম থেকে উঠলে মুখে রক্ত দেখা যায়, ব্রাশ করলে রক্ত পড়ে, শক্ত খাবার খেলে রক্ত পড়ে, মুখে দুর্গন্ধ হয় এবং মাড়ি লাল হয়ে যায়, মাড়ি ফুলে যায়।
পেরিওডন্টাইটিস রোগের সমস্যাসমূহ :
মাড়ির প্রদাহ রোগের সমস্যাসমূহ বিরাজমান থাকবে। এ ছাড়া মাড়ি সরে যায়, দাঁত পড়ে যায়, দাঁত ফাঁকা হতে থাকে, দাঁত দিয়ে কামড় দিলে ব্যথা করে, দাঁত শিরশির করে, দাঁতের ফাঁকে খাদ্য জমে যায়।
দাঁত সুস্থ-সবল আছে কি না, তা দেখার জন্য ক্লিনিক্যালি যেসব পরীক্ষা করা হয় বা যেসব ল্যাব পরীক্ষা বা রেডিওলজিক্যাল পরীক্ষা করা হয়ে থাকে—
ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা :
♦ ডেন্টাল প্লাকের অবস্থান পরীক্ষা
♦ ডেন্টাল ক্যালকুলাসের অবস্থা পরীক্ষা
♦ মাড়ির অবস্থা পরীক্ষা
♦ পেরিওন্টাল টিস্যুর গঠনগত অবস্থা পরীক্ষা
♦ মাড়ি সরে যাওয়া পরীক্ষা
♦ ব্লিডিং অন প্রবিং পরীক্ষা
ল্যাব পরীক্ষা :
রক্তে গ্লুকোজ পরীক্ষা, ব্লাড সিবিসি পরীক্ষা, ব্লিডিং টাইম, ক্লটিং টাইম পরীক্ষা।
রেডিওলজিক্যাল পরীক্ষা :
♦ এক্স-রে পি/এ ভিউ হএক্স-রে ওপিজি
♦ এক্স-রে বাইটওয়িং হসিবিসিটি
অত্যাধুনিক পরীক্ষাসমূহ :
♦ এন্ডোমাইক্রোস্কোপের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হয়, এপেক্স লোকেটর মাধ্যমে পরীক্ষা করা যায় এবং পেরিওস্কোপ।
উপরোক্ত পরীক্ষাগুলো করে সঠিকভাবে দাঁতের যত্ন নেওয়া একজন সুস্থ-সবল মানুষ ছয় মাস অন্তর ডাক্তারের শরণাপন্ন হলে ডাক্তার প্রয়োজন অনুসারে ব্যবস্থা নেবেন।
অন্যদিকে যাঁদের বংশগতভাবে দাঁতের সমস্যা রয়েছে অথবা যারা ঠিকমতো দাঁতের যত্ন বা পরিচর্যা করেন না, তারা তিন-চার মাস পর পর ডাক্তারের কাছে গেলে ডাক্তার প্রয়োজন অনুসারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন।
অন্যদিকে যারা মুখ ও দাঁতের যত্ন একেবারেই নেন না বা মুখে অনেক ধরনের প্রসথেসিস বা অনেক ফিলিং করা দাঁত আছে, তাঁদের এক থেকে তিন মাস অন্তর ডাক্তারের মাধ্যমে দাঁত পরীক্ষা করানো উচিত। ডাক্তার প্রয়োজন হলে এক্স-রে বা অন্যান্য পরীক্ষা করবেন।
লেখক : প্রিন্সিপাল
খুলনা ডেন্টাল কলেজ
Leave a Reply