দেশে সিসার দূষণে বছরে ১ লাখ ৩৮ হাজার মৃত্যু

  • আপডেট সময় বুধবার, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৩
  • 156 পাঠক

দিশারী ডেস্ক। ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ।

বাংলাদেশে প্রতি বছর ১ লাখ ৩৮ হাজারেরও বেশি মানুষ সিসা দূষণের কারণে মারা যাচ্ছে। সিসার দূষণে শিশুদের আইকিউ কমে যাচ্ছে। যা শিশুদের বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হওয়ার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।

চিকিৎসা সাময়িকী ‘ দ্য ল্যানসেট প্ল্যানেটারি হেলথ জার্নালে ’ প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। ‘ গ্লোবাল হেলথ বার্ডেন অ্যান্ড কস্ট অব লেড এক্সপোজার ইন চিলড্রেন অ্যান্ড অ্যাডাল্টস : অ্যা হেলথ ইমপ্যাক্ট অ্যান্ড ইকোনমিক মডেলিং অ্যানালাইসিস’ নামের এই গবেষণাটি করেছেন বিশ্বব্যাংকের একদল গবেষক। খবর : বিবিসি।

প্রতিবেদনটির মতে, বাংলাদেশ সিসাদূষণের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া দেশগুলোর মধ্যে চতুর্থ। সিসাদূষণের ফলে শিশুদের আইকিউ কমার পাশাপাশি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। আর্থিক ক্ষতির হিসেবে এর পরিমাণ প্রায় ২৮ হাজার ৬৩৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। সিসা শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে বাধা দেয়।

বাংলাদেশের ২০১৯ সালের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে গবেষকরা দেখতে পান, শূন্য থেকে চার বছর বয়সী শিশুদের আইকিউ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সিসাদূষণের কারণে। ফলে শিশুদের নতুন কিছু বুঝতে সমস্যা হচ্ছে, সামাজিক মেলামেশায় বেগ পেতে হচ্ছে, খাবারে রুচির অভাব, ওজন কমে যাওয়া, খিটখিটে মেজাজসহ নানা অসুবিধার সৃষ্টি হচ্ছে।

ইউনিসেফ বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. প্রিসিলা ওবিল এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ বাংলাদেশে শিশুদের রক্তে উচ্চমাত্রায় সিসার উপস্থিতি তাদের মেধার পূর্ণ বিকাশের ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা। এ ছাড়া সিসাদূষণের ফলে তাদের আইকিউ কমে যাচ্ছে, যা দেশটির সার্বিক উন্নয়নে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
তাই সিসাদূষণ বন্ধে জাতীয় পর্যায়ে উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি।’

আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) সংক্রামক রোগ বিভাগের প্রকল্প সমন্বয়ক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘সিসাদূষণ রোধে এখনই উপযুক্ত সময়। এই সমস্যাকে সমূলে উৎপাটনের জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।’

প্রকাশিত গবেষণাটির অংশ হিসেবে খুলনা, রাজশাহী ও বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ২০০টি নমুনা সংগ্রহ করে সিসার উপস্থিতি পরিমাপ করে দেখেছে নিউইয়র্ক ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘পিওর আর্থ’। যেখানে থাকা ২৪% নমুনাতেই মাত্রাতিরিক্ত সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। খাবার রাখার জন্য ব্যবহৃত ধাতব পাত্রে ৫৯%, প্লাস্টিকের পাত্রে ৯%, সিরামিক পাত্রে ৪৪%, রঙে ৫৪%, খেলনায় ১৩%, স্টার্চে ১৭%, রান্নায় ব্যবহৃত মশলায় ৭% এবং প্রসাধনী পণ্যে ৬% অতিমাত্রায় ক্ষতিকর সিসার সন্ধান পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশের মানুষের রক্তে প্রতি ডেসিলিটারে গড়ে প্রায় ৬.৮ মাইক্রোগ্রাম সিসা পাওয়া গেছে বলে গবেষণা প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে।

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!