দেশে বছরে ১২ শতাংশ মৃত্যু ক্যান্সারে

  • আপডেট সময় রবিবার, ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৫
  • 15 পাঠক

দিশারী ডেস্ক। ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

দেশে প্রতি ১ লাখ মানুষের মধ্যে ১০৬ জনের ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার তথ্য ওঠে এসেছে এক গবেষণায়। এতে বলা হয়, বছরে প্রতি লাখে নতুন করে ক্যান্সার আক্রান্ত হচ্ছেন ৫৩ জন, আর মোট মৃত্যুর ১২ শতাংশের জন্য দায়ী এ রোগ।

শনিবার রাজধানীর বিএসএমএমইউর সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে ‘ বাংলাদেশে ক্যান্সারের বোঝা : জনসংখ্যাভিত্তিক ক্যান্সার রেজিস্ট্রি শীর্ষক এক গবেষণার ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়।

দেশে ৩৮ ধরনের ক্যান্সারে মানুষ আক্রান্ত হয় জানিয়ে গবেষণায় বলা হয়, এর মধ্যে স্তন, মুখ, পাকস্থলী, শ্বাসনালি ও জরায়ুমুখ ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা বেশি।

প্রধান গবেষক বিএসএমএমইউর পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খালেকুজ্জামান বলেন, কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলায় ২০২৩ সালের জুলাই মাস থেকে এ গবেষণাটি পরিচালিত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ৪৬ হাজার ৬৩১টি পরিবারের ২ লাখের বেশি অংশগ্রহণকারীকে এ গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৪৮ দশমিক ৪ শতাংশ পুরুষ এবং ৫১ দশমিক ৬ শতাংশ নারী।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে মোট ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা ২১৪ জন। ক্যান্সারের প্রাদুর্ভাব বিবেচনায় প্রতি লাখে আক্রান্তের সংখ্যা ১০৬ জন (পুরুষের ক্ষেত্রে প্রতি লাখে ১১৮ জন এবং নারীর ক্ষেত্রে প্রতি লাখে ৯৬ জন)।

ক্যান্সার রোগীদের ৯২ দশমিক ৫ শতাংশ ১৮ থেকে ৭৫ বছর বয়সি। ১৮ বছরের কম বয়সি ক্যান্সার রোগী আছেন ২ দশমিক ৪ শতাংশ এবং ৭৫ বছরের বেশি বয়সি ক্যান্সার রোগী আছেন ৫ দশমিক ১ শতাংশ। গবেষণায় দেখা গেছে, আক্রান্তদের মধ্যে ১৬ দশমিক ৮ শতাংশই স্তন ক্যান্সার রোগী। ঠোঁট ও মুখগহ্বর ক্যান্সার আক্রান্তের হার ৮ দশমিক ৪ শতাংশ, পাকস্থলী ক্যান্সার আক্রান্তের হার ৭ শতাংশ, স্বরযন্ত্র ক্যান্সার আক্রান্তের হার ৭ শতাংশ এবং জরায়ুমুখ আক্রান্তের হার ৫ দশমিক ১ শতাংশ। ফুসফুস, শ্বাসনালি ও পাকস্থলীর ক্যান্সারে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটছে।

গবেষক খালেকুজ্জামান বলেন, ক্যান্সার বিশ্বে মৃত্যুর প্রধান কারণগুলোর একটি। বাংলাদেশে জনসংখ্যাভিত্তিক ক্যান্সার রেজিস্ট্রি বা নিবন্ধন (পিবিসিআর) না থাকায় প্রতিবেশী দেশগুলোর তথ্য ব্যবহার করে ক্যান্সারের পরিস্থিতি অনুমান করতে হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক সায়েদুর রহমান বলেন, বিএসএমএমইউ থেকে সেই গবেষণায় পরিচালনা করা উচিত- যা রোগীদের কল্যাণে কাজে আসে। যেসব গবেষণা দেশের মানুষের, দেশের রোগীদের উপকার হবে, সেক্ষেত্রে সরকারের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।

বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শাহিনুল আলম বলেন, বিএসএমএমইউর উদ্যোগে পরিচালিত বাংলাদেশে জনসংখ্যাভিত্তিক ক্যান্সার রেজিস্ট্রি থেকে যে পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে তা দেশের মানুষের ক্যান্সার প্রতিরোধ, প্রতিকার ও ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসায় বিরাট ভূমিকা রাখবে।

বিএসএমএমইউর উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক মুজিবুর রহমান হাওলাদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক নাহরীন আখতার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক সৈয়দ জাকির হোসেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আতিকুল হক।

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!