কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে ১০ বছরে ৬১ জনের মৃত্যু

  • আপডেট সময় সোমবার, ৪ আগস্ট, ২০২৫
  • ৪৫ পাঠক

দিশারী ডেস্ক।। ৪ আগষ্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ।।

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার পর্যটকদের জন্য দিন দিন অনিরাপদ ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠেছে। সৈকতে পর্যাপ্ত লাইফ গার্ড ব্যবস্থার অভাব, পর্যটকদের উদাসীনতা ও নিরাপত্তার অভাবে প্রায় ঘটছে পর্যটক মৃত্যুর ঘটনা। এ ছাড়া পর্যটকদের সমুদ্রস্নানে উদ্ধারে নেই কোনো ‘ডুবুরিদল’ ফলে সাগরে ডুবে পর্যটক মৃত্যুর ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

লাইফ গার্ড সংস্থার তথ্য মতে, কক্সবাজারে গত ১০ বছরে সমুদ্রে গোসলে নেমে মৃত্যু হয়েছে ৬১ জনের এবং জীবিত উদ্ধার হয়েছে সহস্রাধিক।

———————————————————————————————————–

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের পেচারদ্বীপ এরিয়া। এখানে পর্যটকদের আনাগোনা খুব একটা হয় না। তাই নেই লাইফ গার্ড সেবা। ৮ জুলাই পেচারদ্বীপ সমুদ্রসৈকতে গোসলে নেমে মৃত্যু হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাবাব ও আসিফ আহমেদের। এখনো হদিস নেই আরেক শিক্ষার্থী অরিত্র হাসানের।

———————————————————————————————————–

নিখোঁজ দুই শিক্ষার্থীকে উদ্ধারে তৎপরতা চালায় জেলা প্রশাসন, ট্যুরিস্ট পুলিশ, কোস্ট গার্ড, ফায়ার সার্ভিস ও লাইফ গার্ড কর্মীরা। কিন্তু তাদের উদ্ধারে নেই কোনো ডুবুরিদল। শুধু জেট স্কিই ভরসা, সেটি দিয়েই চলেছে তল্লাশি কার্যক্রম।

এদিকে বর্ষা মৌসুমে সাগর উত্তাল থাকে, স্রোতের টানও বেশি। তাই পর্যটকদের সমুদ্রস্নানে সতর্কতা হিসেবে বালিয়াড়িতে লাল পতাকা টানানো হয়। কিন্তু অনেক পর্যটক নির্দেশনা মানেন না। যার কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে।

এদিকে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের লাবনী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টে লাইফ গার্ড কর্মী থাকলেও তাদের সংখ্যা খুবই কম। নেই পর্যাপ্ত উদ্ধার সরঞ্জামও। লাইফ গার্ড সংস্থা জানিয়েছে, এই তিনটি পয়েন্ট ছাড়াও অন্যান্য পয়েন্টে পর্যটকদের নিরাপত্তায় লাইফ গার্ড সেবার আওতায় আনা জরুরি।

সি সেফ লাইফ গার্ড সংস্থার প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ইনানী-পাটুয়ারটেক থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে দক্ষ লাইফ গার্ড কর্মী থাকা প্রয়োজন, যাতে প্রয়োজনে দ্রুত উদ্ধার করা যায় এবং পর্যটকদের সতর্ক করা যায়। এতে তাদের সমুদ্রস্নানের নিরাপত্তা বাড়বে।

সি সেফ লাইফ গার্ড সংস্থা জানায়, চলতি জুলাই মাসে পেচারদ্বীপ সমুদ্রসৈকতে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটল। এ সময় সাগরে ডুবে আহত হয়েছিল পর্যটকদের একটি গ্রুপ। গত জুন মাসে পেচারদ্বীপ সৈকতে গোসলে নেমে ছয়জনের মৃত্যু হয়।

কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক মো. তানহারুল ইসলাম বলেন, সাগরে যদি কেউ ডুবে যায়, তার কিছু সময় পর বা জোয়ারের সময় ভেসে আসে। সেই পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। সাগরে তল্লাশি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ডুবুরিদল নেই।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজারের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, সাগর উত্তাল থাকলে নামা যাবে না। স্রোতের টানে সমুদ্রস্নান করবেন না। অতি উৎসাহ দেখাবেন না। কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে পর্যটকদের অসতর্কতার কারণেই দুর্ঘটনা ঘটছে। বৈরী আবহাওয়ায় সাগর বেশি উত্তাল থাকলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে, যেন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সমুদ্রস্নান বন্ধ রাখা হয়।

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!