কোরআনে || মুমিনের ৬ গুণ

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, এপ্রিল ১৩, ২০২১
  • 734 পাঠক

মুহাম্মাদ হেদায়াতুল্লাহ
————–

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা মুমিনের বহু গুণাবলি বর্ণনা করেছেন। পার্থিব জীবনে আল্লাহর নির্দেশনামতে সুখ-শান্তি লাভের পাশাপাশি পরকালেও যেন অফুরন্ত শান্তি লাভ করা যায়। এখানে পবিত্র কোরআনের সুরা মুমিনুন-এ বর্ণিত উল্লিখিত মুমিনদের কয়েকটি অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হলো।

মুমিনের ছয় বৈশিষ্ট্য

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অবশ্যই মুমিনরা সফলকাম হয়েছে। যারা নিজেদের নামাজে বিনয়াবনত। যারা অসার কাজ থেকে বিরত থাকে। যারা জাকাত আদায় করে। যারা নিজেদের লজ্জাস্থান হেফাজত করে; নিজেদের স্ত্রী ও অধিকারভুক্ত দাসীরা ছাড়া, এতে তারা নিন্দিত হবে না। অতঃপর তারা ছাড়া অন্য কাউকে কামনা করলে তারা সীমালঙ্ঘনকারী হবে। এবং যারা নিজেদের আমানত ও অঙ্গীকার পালন করে। যারা নামাজ আদায়ে যত্নবান থাকে। তারাই উত্তরাধীকারী হবে জান্নাতুল ফেরদাউসের, তারা সেখানে চিরকাল থাকবে। (সুরা মুমিনুন, আয়াত : ১-১১)

এক. নামাজে একাগ্রতা : উসমান বিন আফফান (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘নামাজের সময় হলে একজন মুসলিম সুন্দর করে অজু করে একাগ্রচিত্তে রুকুসহ নামাজ আদায় করলে তাঁর অতীতের সব গুনাহ ক্ষমা করা হয়। যদি সে কবিরা গুনাহ না করে। আর এমনটি তার পুরো জীবনে হয়।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২২৮)

দুই. অসার কাজ পরিহার : সব ধরনের অনর্থক কাজকর্ম থেকে বেঁচে থাকা মুমিনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। গালি দেওয়া, মন্দ কথা বলা, পাপকর্ম ও শিরকসহ সময় নষ্ট হয় এ ধরনের সব কাজ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তারা (মুমিন) অসার কাজের সম্মুখীন হলে আত্মসম্মান রক্ষা করে চলে যায়।’ (সুরা ফোরকান, আয়াত : ৭১)

তিন. জাকাতের মাধ্যমে আত্মশুদ্ধি অর্জন : আবু মালেক আশয়ারি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, পবিত্র ঈমানের অংশ। আল্লাহামদুলিল্লাহ (আখেরাতের) দাঁড়িপাল্লা ভরপুর করবে। সুবহানাল্লাহ ও আলহামদুলিল্লাহ আসমান ও জমিনের মধ্যভাগ পূর্ণ করে। নামাজ নূরের মতো। দানের মাধ্যমে (ঈমানের) প্রমাণ মেলে। ধৈর্য জ্যোতির সমতুল্য। কোরআন তোমার পক্ষে কিংবা বিপক্ষে সাক্ষ্য দেবে। মানুষ সকাল করে নিজেকে বিক্রয় করে। অতঃপর নিজেকে রক্ষা করে কিংবা ধ্বংস করে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২২৩)

চার. লজ্জাস্থানের সুরক্ষা : আধ্যাত্মিক ও দৈহিক পবিত্রতা মুমিনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। শরিয়তে নিষিদ্ধ পন্থায় নিজের জৈবিক কামনা-বাসনা পূরণ করা থেকে বিরত থাকা মুমিনের অন্যতম পরিচয়। এ ছাড়া হারাম পন্থা থেকে নিজের অন্তরকে রক্ষা করাও জরুরি। নতুবা ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের মধ্যে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আপনি মুমিনদের বলুন, তারা যেন দৃষ্টিবনত রাখে এবং নিজেদের লজ্জাস্থান সুরক্ষা করে। তা তাদের জন্য পবিত্রতর, তারা যা করে আল্লাহ এ সম্পর্কে অবগত।’ (সুরা নূর, আয়াত : ৩০)

পাঁচ. আমানত ও অঙ্গীকার পূরণ করা : মুমিন নিজের অঙ্গীকার পূরণ করে এবং অন্যের গচ্ছিত সম্পদ যথাযথভাবে আদায় করে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘মুনাফিকের তিনটি বৈশিষ্ট্য : কথা বললে মিথ্যা বলে, অঙ্গীকার করলে পূরণ করে না, আমানত দেওয়া হলে এর অন্যায় ব্যবহার করে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৩)

ছয়. নামাজের প্রতি যত্নবান : মুমিন নামাজের প্রতি সর্বদা যত্নবান থাকে। যেন যথাসময়ে নামাজ আদায় করতে পারে। আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করি, সবচেয়ে উত্তম কোন কাজ? তিনি বলেন, যথাসময়ে নামাজ আদায় করা। আমি বললাম, অতঃপর কোন কাজ? তিনি বলেন, মা-বাবার সঙ্গে সদাচার। আমি বললাম, অতঃপর কোন কাজ? তিনি বলেন, আল্লাহর পথে জিহাদ করা। আমি তাঁর কাছে আরো জানতে চাইলে তিনি আরো বলতেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫২৭)

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!