রুমানা ইসলাম।। ১৮ আগষ্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ।।
‘ অভয়াশ্রম গড়ে তুলি , দেশি মাছে দেশ ভরি ’ এই প্রতিপাদ্যে নোয়াখালীতে পালিত হয়েছে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ। সোমবার (১৮ আগস্ট), সকাল ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন ও জেলা মৎস্য দপ্তরের উদ্যোগে এক আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে জেলা প্রশাসক কার্যালয় সংলগ্ন দীঘিতে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। পরবর্তীতে বর্ণাঢ্য র্যালি অনুষ্ঠিত হয়ে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইকবাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ ফয়েজ উদ্দীন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আখিনূর জাহান নীলা এবং নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন সায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মেহেদী মাহমুদুল হাসান।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ জিয়া উদ্দিন। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মনজুরুল আমিন রাসেল।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, নোয়াখালী একটি উপকূলীয় জেলা হওয়ায় মৎস্য সম্পদের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। প্রাকৃতিক সম্পদকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, দারিদ্র্য হ্রাস এবং জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা সম্ভব। একইসঙ্গে নদী ও উপকূলীয় এলাকায় মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি সামুদ্রিক মাছ সংরক্ষণে সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নের ওপরও গুরুত্বারোপ করা হয়।
অনুষ্ঠানে জেলার সেরা মৎস্য চাষী, উদ্যোক্তা ও মৎস্য খাতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সফল উদ্যোক্তাদের সম্মাননা ও পুরস্কার প্রদান করা হয়। সম্মাননা প্রাপ্তদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন নোয়াখালীর সদর উপজেলার বদপুরের আলা উদ্দিন ফিশারিজের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, সাগরিকা উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক
সাইফুল ইসলাম, বেগমগঞ্জের রসুলপুরের ফিস ফিলিমিটেডের মাহাবুবুর রহমান, কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুরের ভাই ভাই পোল্ট্রি এন্ড ফিশারিজের আবু নাসের খান।
————————————————————————————————–
এর মধ্যে বিশেষভাবে আলোচিত হয়েছেন সদর উপজেলার বদরপুরের সফল মৎস্য উদ্যোক্তা মোহাম্মদ আলাউদ্দিন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি মৎস্য খাতে কাজ করে আসছেন এবং আধুনিক পদ্ধতিতে মৎস্য চাষের মাধ্যমে একদিকে যেমন উৎপাদন বাড়িয়েছেন, অন্যদিকে কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা করেছেন। বর্তমানে তার প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১০০ জনের অধিক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। স্থানীয় অনেক বেকার যুবক তার প্রকল্পে কাজের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহের সুযোগ পাচ্ছেন। মাছ চাষে তার সফলতা শুধু স্থানীয় পর্যায়ে নয়, বরং জেলা ও জাতীয় পর্যায়ে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
————————————————————————————————–
আলাউদ্দিন ফিশারিজের এই সাফল্য প্রমাণ করে, সঠিক পরিকল্পনা ও উদ্যোগের মাধ্যমে মৎস্য খাত বাংলাদেশে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির এক বড় হাতিয়ার হতে পারে।আলাউদ্দিন ফিশারী সত্বাধিকারী মোহাম্মদ আলাউদ্দিন এই সফল উদ্যোগটা হওয়ার পেছনে যারা সহযোগিতা করেছেন সকলকে শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন, সদর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দসহ স্বপ্ন পূরণ মৎস্য চাষী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সকল সদস্য বৃন্দকে পরামর্শ দিয়ে পাশে থাকার জন্য।
Leave a Reply