আটা-ময়দা মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে অত্যাধুনিক গুঁড়ো দুধ

  • আপডেট সময় সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ৩ পাঠক

দিশারী ডেস্ক।। ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ।।

বাজার থেকে প্রথমে সংগ্রহ করা হয় নামি ব্র্যান্ডের প্যাকেট। এরপর মেয়াদোত্তীর্ণ গুঁড়া দুধ জোগাড় করা হয়। তারপর তাতে মেশানো হয় আটা। প্যাকেটে ‘এনজিএস ফুড প্রোডাক্টস’ নাম দিয়ে এই দুধই ফুল ক্রিম মিল্ক পাউডার হিসেবে বাজারজাত করা হয় পাইকারি মোকাম খাতুনগঞ্জে। সেখান থেকে এই ভেজাল দুধ চলে যায় চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলায়।

শুধু এনজিএস নয়, নামিদামি ব্র্যান্ডের নাম নকল করে একইভাবে বাজারজাত হচ্ছে সানো, নার্কস, ফেয়ারলাইফ, পিপ্লোমাসহ নন-ব্র্যান্ডেড অর্ধডজন ভেজাল গুঁড়া দুধ। এসব দুধে মেশানো হয় পাউডার, আটা, ময়দা, ফরমালিন, ডালডা ইত্যাদি।

২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক অভিযানে চট্টগ্রামের উত্তর কাট্টলি থেকে আটক হন ‘ এনজিএস ফুড প্রোডাক্টস ’এর ম্যানেজার সাগর দে। ১৫ দিনের কারাদণ্ডসহ তাঁকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

সাগর দে জানান, ভেজাল ও নিম্নমানের দুধ বাজারজাত করা হয় দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে। একটি গ্রুপ বড় ধরনের কমিশন দিয়ে এটি নিয়ে যায় পাহাড়তলী, রেয়াজুদ্দিন বাজার কিংবা খাতুনগঞ্জের মতো মোকামে। আরেকটি গ্রুপ বাজারজাত করে অলিগলির ছোট দোকানে। এজন্য বিএসটিআই ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের লোকদের নিয়মিত মাসোহারা দেন তারা। এটি না দিলে ঘন ঘন অভিযান চালিয়ে বড় অঙ্কের জরিমানা করা হয়।

জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট হুসাইন মোহাম্মদ বলেন, কোন দুধ নিম্নমানের, কোনটিতে কী ভেজাল উপকরণ রয়েছে, তা দেখার কথা বিএসটিআই ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের। তারা এটি ঠিকমতো করেন না বলে পাইকারি মোকামেও নিম্নমানের দুধ বাজারজাত করার সাহস দেখাচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা।

খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ছগীর আহমেদ বলেন, তিন ধরনের গুঁড়া দুধ পাওয়া যায় বাজারে। সাধারণ ফুল ক্রিম মিল্ক পাউডার, শিশুদের জন্য বিশেষায়িত দুধ এবং বিভিন্ন প্যাকেজিংয়ের (ছোট ও বড়) গুঁড়া দুধ। খাতুনগঞ্জে অভিযান চালিয়ে এর আগে ‘ফেয়ারলাইফ মিল্ক পাউডার’ নামে মোড়কজাত করা গুঁড়া দুধও উদ্ধার করেছেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ফুড সেইফটি অ্যান্ড নিউট্রিশনের পরিচালক অধ্যাপক ড. শামসুল মোর্শেদ বলেন, গুঁড়া দুধ যদি নিম্নমানের হয় তাহলে শিশুর দেহে ভয়াবহ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। বাজারে নিম্নমানের ও ভেজাল অনেক গুঁড়া দুধ বিক্রি হচ্ছে প্রকাশ্যে। এটি কঠোরভাবে মনিটর করা উচিত।

বিএসটিআই চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রামের বিএসটিআই কার্যালয়ে পর্যাপ্ত জনবল নেই। এতদিন ছিল না পূর্ণাঙ্গ ল্যাব সুবিধাও। তিনি ঢাকা থেকে অনলাইনে চট্টগ্রামের অফিস চালাচ্ছেন বলে জানান। তবে দায়িত্বে থাকা উপপরিচালক গোলাম রব্বানি বলেন, অভিযানের ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না।

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!