তাল কোন গুণে ভরপুর ?

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ২৬ পাঠক

দিশারী ডেস্ক।।। ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ।।

গ্রীষ্মের প্রখর রোদে মাঠের ধারে দাঁড়িয়ে থাকা তালগাছ শুধু ছায়া নয়, নিয়ে আসে শীতলতার এক স্বাদও। বাংলার গ্রামীণ জীবনে পাকা তাল এক গভীর স্মৃতি ও ঐতিহ্যের অংশ। শরতের হাওয়ায় যখন তালগাছে ঝুলে থাকা ফল পেকে যায়, তখন সেই ঘন সুগন্ধে ভরে ওঠে গ্রাম। তালের স্বাদ যেমন অনন্য, তেমনি এর পুষ্টিগুণও ভীষণ সমৃদ্ধ।

পুষ্টিগুণ 

পাকা তালের ভেতরের নরম শাঁস ঘষে বের করা ‘ তালের রস ’ বিভিন্ন মিষ্টান্ন তৈরির মূল উপাদান। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে শর্করা, যা শরীরে দ্রুত শক্তি জোগায়। এ ছাড়া ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ এই ফল দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, হাড় মজবুত করতে এবং রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে সহায়ক। তালের আঁশ হজমে সহায়তা করে ও পেটের নানা সমস্যা কমায়। লোকজ চিকিৎসায়ও পাকা তালের কদর আছে। গরমে তালের শরবত শরীর ঠান্ডা রাখে, আবার খোসা শুকিয়ে ওষুধ তৈরিতেও ব্যবহার হয়।

সংরক্ষণের উপায়

পাকা তালের সমস্যা হলো এটি দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। তাই সঠিকভাবে সংরক্ষণ জানা জরুরি। তাল ঘষে বের করা রস ভালোভাবে ছেঁকে বায়ুরোধী পাত্রে রেখে ফ্রিজে রাখলে ২-৩ দিন ভালো থাকে। দীর্ঘ মেয়াদে সংরক্ষণের জন্য তাল ঘষে পেস্ট করে ছোট প্যাকেট আকারে ফ্রিজে জমিয়ে রাখা যায়। এতে কয়েক মাস পরও পিঠা বা মিষ্টান্নে ব্যবহার করা সম্ভব।

অনেক জায়গায় তালের রস রোদে শুকিয়ে ‘ তালের বড়ি ’ বা শুকনো পাউডার তৈরি করা হয়। এগুলো পরে পানিতে মিশিয়ে পিঠা বা পায়েসে ব্যবহার করা যায়।

পাকা তাল থেকে স্থানীয়ভাবে তালের গুড় তৈরি হয়, যা শুধু সংরক্ষণই নয়, পুষ্টির উৎস হিসেবেও বছরের পর বছর ব্যবহার করা যায়।

পাকা তাল সংস্কৃতি ও খাদ্যভান্ডারের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এর মিষ্টি স্বাদ শুধু শরীর নয়, মনে আনে উৎসবের আবহ। সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে পারলে এই ঐতিহ্যবাহী ফলের স্বাদ ও পুষ্টি ভোগ করা সম্ভব হয় বছরজুড়ে।

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!