দুই কারণে দোয়া তাৎক্ষণিক কবুল হয় না

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৩ নভেম্বর, ২০২২
  • ২৮৭ পাঠক

দৈনিক দিশারী ডেস্ক

——————
দোয়া অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ ইবাদত। সর্বাবস্থায় যারা মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করে, আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন। আল্লাহ আমাদের প্রতিটি দোয়াই কবুল করেন। কিছু দোয়ার ফলাফল তাড়াতাড়ি দেন, কিছু দোয়ার ফলাফল আখিরাতের জন্য জমা রেখে দেন।

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। ’ (সুরা : গাফির, আয়াত : ৬০)
অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যখন আমার বান্দাগণ তোমাকে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবে, আমি তো নিশ্চয় নিকটবর্তী। আমি আহবানকারীর ডাকে সাড়া দিই, যখন সে আমাকে ডাকে। সুতরাং তারা যেন আমার ডাকে সাড়া দেয় এবং আমার প্রতি ঈমান আনে। আশা করা যায় তারা সঠিক পথে চলবে। ’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৮৬)

আয়াতগুলো দ্বারা বোঝা যায়, বান্দা সঠিক পদ্ধতিতে আল্লাহর কাছে দোয়া করলে আল্লাহ তা কবুল করেন। তবে কখনো দোয়ার ফলাফল তাৎক্ষণিক পাওয়া যায়। এতেও মানুষের বহু কল্যাণ নিহিত থাকে। নিম্নে এমন দুটি কারণ তুলে ধরা হলো, যে কারণে সাধারণত মানুষের দোয়া তাৎক্ষণিক কবুল হয় না।

আরো উত্তম কিছু দেবেন বলে : কখনো কখনো দোয়ার ফলাফল দুনিয়াতে দৃশ্যমান হয় না। তবে এর বিনিময়ে মহান আল্লাহ মানুষকে আরো বহু গুণ উত্তম প্রতিদান দেন। সে দোয়ার মধ্যে যা চেয়েছিল, তা হয়তো তাকে সাময়িক কষ্ট থেকে রক্ষা করত; কিন্তু মহান আল্লাহ তাকে সাময়িক সুখটুকু না দিয়ে স্থায়ী সুখের ব্যবস্থা করে দেন।
আতা ইবনে আবু রাবাহ (রা.) বলেন, ইবনে আব্বাস (রা.) আমাকে বলেন, আমি কি তোমাকে একজন জান্নাতি নারী দেখাব না? আমি বললাম, অবশ্যই। তখন তিনি বলেন, এই কালো রঙের নারী, সে নবী (সা.)-এর কাছে এসেছিল। তারপর সে বলল, আমি মৃগী রোগে আক্রান্ত হই এবং এ অবস্থায় আমার লজ্জাস্থান খুলে যায়। সুতরাং আপনি আমার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করুন।
নবী (সা.) বলেন, তুমি যদি চাও ধৈর্যধারণ করতে পারো। তোমার জন্য আছে জান্নাত। আর তুমি যদি চাও, তাহলে আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করি, যেন তোমাকে আরোগ্য করেন। ওই নারী বলল, আমি ধৈর্যধারণ করব। সে বলল, ওই অবস্থায় আমার লজ্জাস্থান খুলে যায়, কাজেই আল্লাহর কাছে দোয়া করুন যেন আমার লজ্জাস্থান খুলে না যায়। নবী (সা.) তাঁর জন্য দোয়া করলেন। (বুখারি, হাদিস : ৫৬৫২)

দুনিয়া যেহেতু পরীক্ষাগার : দুনিয়া যেহেতু পরীক্ষাগার, তাই মানুষের ওপর বিভিন্ন বিপদাপদ ফিতনা-ফ্যাসাদ আসবেই। তাই এসব বিষয়ে কখনো কখনো মহান আল্লাহ তাৎক্ষণিক দোয়ার ফলাফল দেবেন না। সাদ (রা.) তার পিতা সূত্রে বলেন, রাসুল (সা.)…বলেন, আমি আমার প্রতিপালকের কাছে তিনটি বিষয় প্রার্থনা করেছি। তন্মধ্যে তিনি আমাকে দুটি প্রদান করেছেন এবং একটি প্রদান করেননি। আমি আমার প্রতিপালকের নিকট প্রার্থনা করেছিলাম, যেন তিনি আমার উম্মতকে দুর্ভিক্ষের দ্বারা ধ্বংস না করেন। তিনি আমার এই দোয়া কবুল করেছেন। তাঁর কাছে এ-ও প্রার্থনা করেছিলাম যে তিনি যেন আমার উম্মতকে পানিতে ডুবিয়ে ধ্বংস না করেন। তিনি আমার এই দোয়াও কবুল করেছেন। আমি তাঁর কাছে এ মর্মেও দোয়া করেছিলাম যে যেন মুসলিমরা পরস্পর একে অপরের বিপক্ষে যুদ্ধে জড়িয়ে না পড়ে। তিনি আমার এই দোয়া কবুল করেননি। (মুসলিম, হাদিস : ৭৩৫২)

তাই আমাদের উচিত, দোয়ার ফলাফল তাৎক্ষণিক দৃশ্যমান না হলেও আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা রেখে দোয়া চালিয়ে যাওয়া।

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!