এ কে এম ফারুক হোসেন। ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ।
সেবার দরজা চব্বিশ ঘণ্টায় খোলা রেখেছেন নোয়াখালীর নবাগত পুলিশ সুপার। পুলিশের ভাবমূর্তি ফেরাতে নানাবিধ উদ্যোগের অংশ হিসেবে ” দরজা খোলা ” সেবার নীতি চালু করেছেন জেলায় সদ্য যোগদানকৃত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বিপিএম, পিপিএম।
গত ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩ খ্রিস্টাব্দে নোয়াখালী জেলায় নতুন পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি। নতুন কর্মস্হলে যোগ দিয়ে চালু করেন নতুন ধারার সেবানীতি। তাঁর জনবান্ধব সেবানীতির কর্মকান্ডে নোয়াখালীবাসী দৃঢ় বিশ্বাস করে চলছে, এ যেন সত্যিকার পুলিশই জনতার।
১৯ ফেব্রুয়ারি জেলার সোনাইমুড়ি হতে এসেছিলেন সেবা প্রার্থী স্থানীয় কালুয়াইয়ের একজন পারভীন আক্তার। জানান, এলাকার কিশোর গ্যাংয়ের হামলার শিকার হয়ে নিজেকে অনেকটা অসহায়ত্ব নিয়ে এসেছিলেন পুলিশ সুপারের দরবারে। এসেই দেখলেন, দরজা খোলা।
পারভীন আক্তার জানালেন, বিনা বাধায় পুলিশ সুপারের দপ্তরে ডুকে অনেকটাই আনন্দে আত্মহারা হয়ে যান তিনি। বললেন, পুলিশ সুপার আমার অভিযোগের বিষয়টি শোনার জন্য তার চেয়ার ছেড়ে দিয়ে আমার সামনেই এসে দাঁড়ান। আমার অভিযোগ শোনার পর তিনি তাৎক্ষণিকভাবে সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ফোন দিয়ে আমার অভিযোগটি আমলে নিয়ে ২৪ ঘন্টার মধ্যে আসামীদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন। তিনি আরো বলেন, সত্যি বলতে এখানে আসার আগে এমন সেবা পাবো সেটা আমি ভাবতেও পারিনি।
নোয়াখালী থেকে প্রকাশিত দৈনিক দিশারী’র সম্পাদক ও প্রকাশক এবং ডেইলি সানের নোয়াখালী প্রতিনিধি আকাশ মো. জসিম বলেন, গত দু’যুগ নোয়াখালীতে এ পদে বেশ কয়েকজন পুলিশ সুপার দেখেছি। কিন্তু পেশাগতভাবে তাদের সাথে দেখা-সাক্ষাতের ইচ্ছে থাকলেও নানান জটিলতায় দেখা করার ইচ্ছে হতোনা। বলে চলে আমলাতান্ত্রিক ধ্যান ধারণায়, তাদের দরবারে দেখা করা সহজ ছিলনা। বিষয়টি একজন পেশাদার সাংবাদিক হিসেবে নিজের কাছে অসম্মানজনক, দৃষ্টিকটু ও যেন অসহায়ত্বই লাগতো।
তিনি অভিপ্রায় ব্যক্ত করে বলেন, সম্প্রতি এ জেলায় নতুন পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করা মোহাম্মদ আসাদুজ্জামানের জনবান্ধন ” দরজা খোলা ” সেবা নীতি আমাকে দারুনভাবে মুগ্ধ করেছে।
জেলার ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তা ( টিআই, এ্যাডমিন) সিরাজ-উদ-দৌলা বলেন, আমাদের নবাগত পুলিশ সুপার একজন চৌকষ ও ব্যতিক্রমধর্মী পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে সর্বমহলে প্রশংসিত।
এই সেবা নীতি অব্যাহত থাকার বিষয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, যে কোন নাগরিকই সেবা প্রত্যাশার প্রয়োজনে ভোর ৫ টায় ফোন দিলেও আমি সেবা দিতে প্রস্তুত আছি। জেলায় যে কোন ধরনের অন্যায়, অবিচার ও অসামাজিক কর্মধারার অবসানে সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন তিনি।
উল্লেখ্য , বাংলাদেশ পুলিশ ক্যাডারের ২৫ তম ব্যাচের এ কর্মকর্তার বাড়ি শরিয়তপুর জেলার গোসাইর হাটে। এর আগে তিনি ঢাকার বিশেষ পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
Leave a Reply